আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় এক মাসের বেশি সময় ধরে চলছে ইসরাইলি নৃশংসতা। ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠলেও ঢালাওভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন পরিস্থিতিতে আরব বিশ্বে মার্কিনবিরোধী ক্ষোভ বাড়ছে বলে বাইডেন প্রশাসনকে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিরা।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিদেনে জানিয়েছে, হামাসের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালানোর পর থেকেই মার্কিনবিরোধী ক্ষোভ বাড়ছে। এর কারণ হলো গাজায় যে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে তাতে ইসরাইলকে একতরফা সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি একাত্মতা জানিয়ে পাশে থাকার কথা জানিয়েছে মুসলিম বিশ্ব। হামাসকে সমর্থন দিয়ে লড়ছে সিরিয়া, ইয়েমেন ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী। নিরীহ ফিলিস্তিনির পাশে আছে ইরান, সৌদি আরব, এমনকি তুরস্কও।
বলা যায়, চলমান সংঘাতে তেল আবিবকে সমর্থন দেয়া ও যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে দুই মেরুতে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব বিশ্ব। আরব দেশগুলো পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির কথা বললেও যুক্তরাষ্ট্র বারবার এতে হস্তক্ষেপ করছে। এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটনের গ্রহণযোগ্যতা ও অবস্থান ধীরে ধীরে নড়বড়ে হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক জরিপে দেখা যায়, চলমান হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ নিয়ে বাইডেনের নিজ দলে বিভক্তি আরও বেড়েছে। ইসরাইল-হামাস দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের বিষয়ে ডেমোক্র্যাট শিবির প্রায় সমানভাবে বিভক্ত। যুদ্ধ পরিস্থিতি তদারকি করার বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুমোদনে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ৪৬ শতাংশ ডেমোক্র্যাট।
এছাড়াও প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জন ডেমোক্র্যাটই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে বলে উঠে এসেছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-এনওআরসি সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স রিসার্চের জরিপে উঠে আসে এ তথ্য।
এর আগে, চলতি সপ্তাহে আরব আমেরিকান ইন্সটিটিউট পরিচালিত আরেক জরিপে দেখা যায়, বাইডেনের প্রতি মুসলিম ভোটারদের জনপ্রিয়তা ২০২০ সালে যেখানে ছিলোৎ ৫৯ শতাংশ, বর্তমানে তা নেমে এসেছে ১৭ শতাংশে। অর্থাৎ তরতর করে নামছে বাইডেনের জনপ্রিয়তা। কারণ একটাই গাজায় ইসরাইলি বর্বরতায় তার নগ্ন সমর্থন।
এসব বিবেচনায় এবার টনক নড়েছে মার্কিন কূটনীতিকদের। তড়িঘড়ি করে বাইডেন প্রশাসনকে ব্যক্তিগতভাবে সতর্ক করলেন মার্কিন কূটনীতিকরা। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুসলিম ভোটারদের জন্য বাইডেন বিপদে পড়তে পারেন এমন আশঙ্কা থেকেই সতর্ক করা হলো বলেই মনে করা হচ্ছে।