বিনোদন ডেস্ক:
প্রেম-সংঘাত, মান-অভিমান, নিজস্ব সংস্কৃতি ও দেশপ্রেমের ঠাসবুনোট গল্পে মোড়ানো পাশের বাড়ির পরিচিত একটি গল্পের সিনেমা ‘অসম্ভব’। আজ থেকে দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে অরুণা বিশ্বাস পরিচালিত এই সিনেমাটি। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন দর্শক নন্দিত অভিনেত্রী সোহানা সাবা। মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাসহ নানা প্রসঙ্গে কথা বলেন কালবেলার সঙ্গে। আলাপচারিতায় ছিলেন রবিউল ইসলাম রুবেল।
বর্তমান ব্যস্ততা কী নিয়ে?
এখন আমি পুরো সময় রেখেছি ‘অসম্ভব’ সিনেমার জন্য। এই সিনেমাটাকে আমি মন দিয়ে প্রচারণা করব। এই সময় শুধু ‘অসম্ভব’-কে ঘিরে।
‘অসম্ভব’ সিনেমার শুটিংয়ে এমন কোনো ঘটনা বলুন যা আগে বলেননি?
‘পাকনামি করে আগেই বিয়ে করে ফেলেছি’
সেরকম কিছু আসলে বলার মতো নেই। সবই বলেছি। তবে এ সিনেমা শুটিং করার সময় আমার শিডিউল নিয়ে খুব ঝামেলা ছিল। শুটিং শুরুর ১০ থেকে ১২ দিন আগে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আর শীতকালে মেলা, যাত্রা এসব সেট করতে হবে। এগুলো মূলত শীতকালেই হয়। সেই সময়ে শুটিংয়ের জন্য কক্সবাজার ছিলাম। সেখানে থেকে ফিরে পরদিন শুটিং করা খুব কঠিন ছিল।
শীতকালে বৃষ্টির দৃশ্য ধারণ করা হয়েছিল। এটা কঠিন ছিল কি না?
শীতের মধ্যে বৃষ্টির রাতে শুট করার পর অনেকে জানতে চেয়েছিলেন, আমার কিছু হয়েছে কি না। সেদিন শুটিং শেষ করার পর ভীষণ বাজে ভাবে জ্বর এসেছিল। খুব সহজে আমার ঠান্ডা লাগে না। শুধু ঠান্ডা পানি খেলেই সমস্যা হয়। কিন্তু এদিন ভেজার পর আমি অসুস্থ হয়ে গেছি। শারীরিকভাবে অনেক দুর্বল হয়ে গিয়েছিলাম। সেটা উতরে আমি সিনেমাটা সুন্দরভাবে করতে পেরেছি।
সিনেমার নাম ‘অসম্ভব’ কেন?
আমরা পর্দায় যে প্রেম দেখি, সমাজে যেটাকে প্রচলিত ব্যাপার বলা হয়, সেই প্রচলিত ব্যাপারের একটু অন্যরকম প্রেম এখানে দেখানো হয়েছে। গল্পের একটা জায়গায় আমাকে ‘অসম্ভব’ ডায়লগ দিতে হয়। এই ‘অসম্ভব’ বলার পর পুরো জার্নিটাই এই সিনেমার গল্প। সেখানে থেকেই এই সিনেমার নাম ‘অসম্ভব’।
‘অসম্ভব’ সিনেমার গল্প কি অসম্ভব সুন্দর হবে?
অসম্ভব জিনিসটা খুব সাধারণ। গল্প, থিম, অভিনয় সব কিছু খুব সাদামাটা। এই সাদামাটা জিনিসটাই আসলে সিনেমায় দেখবে দর্শক। আর এই সাদামাটা জিনিসটা পর্দায় ফুটিয়ে তোলা খুব কঠিন। আর কঠিন কাজের নিদর্শন হচ্ছে ‘অসম্ভব’।
আপনার সহশিল্পীর শুরুটা কলকাতায়। তার সঙ্গে অভিনয়ে খাপ খাওয়াতে সমস্যা হয়েছিল কি না?
গাজী আবদুন নূরের সঙ্গে আমার কমন সিকোয়েন্স খুব কম ছিল। হয়তো দু-তিনটি সিকোয়েন্স ছিল এক সাথে। ভাষাগত একটা তফাৎ ছিল। নূর বাংলাদেশি হলেও তার টোন হয়ে গেছে কলকাতার মানুষের মতো। সেটা নির্মাতা কাভার করেছে।
নিজেকে ফিট রাখার টোটকা কি?
আমার জীবনযাপন থেকে সব কিছুই খুব সাদামাটা। শুধু পাকনামি করে পালিয়ে গিয়ে আগেই বিয়ে করে ফেলেছি। যেটার কোনো প্রয়োজন ছিল না। চমৎকার একটা সাপোর্টিং পরিবার ছিল আমার। আমার বাচ্চা আছে, বাচ্চা বড় হয়েছে। সবগুলো আনন্দ আমি ভোগ করেছি। হয়তো আমি আমার আনন্দময় জীবনকে আনন্দতর করে কাটাই, সেজন্যই সুন্দর থাকি, ফিট থাকি। এটা আল্লাহ প্রদত্ত। এখন ইয়োগা করছি নিজেকে আরও ভালো রাখার জন্য।
সিনেমায় দেশীয় সংস্কৃতি-ঐতিহ্য কতটুকু জরুরি?
আমার কাছে বরাবর জরুরি হচ্ছে একটা মানুষের নিজের পরিচয় জানা। একটা গাছে শেকড় যত নিচে যাবে, গাছটার বৃদ্ধি তত বেশি এবং মজবুত হবে। তেমনি আমাদের সংস্কৃতি কয়েকশত বছর পুরোনো। অনেক প্রতিবন্ধকতার পর এই সংস্কৃতি ঐতিহ্য আমাদের প্রিয় থেকে প্রিয় হয়েছে। এটা আমাদের নিজস্ব জিনিস। এটা জানা অবশ্যই জরুরি।
‘ফিল্ম পলিটিক্স’ নিয়ে আপনার বক্তব্য কি?
আমি তো নাম-ধামওয়ালা সিনেমার অভিনেত্রী না। কারোর জন্য ক্ষতিকর নই সেজন্য। আমি সেভাবে পলিটিক্সের শিকার হইনি। এটা নিয়ে আমার বলাটা সমীচীন হবে।
আপনার সিনেমা ‘অসম্ভব’ নিয়ে কালবেলার পাঠকদের কি বলবেন?
আমি গ্যারান্টি দিতে পারি, যারা সিনেমাটি দেখবেন তারা কেউ আশাহত হবেন না। সবাইকে নিয়ে সিনেমা হলে গিয়ে হইহই রইরই করে দেখার মতো একটি সিনেমা ‘অসম্ভব’। এখানে নাচ গান সবই আছে।