হোম এক্সক্লুসিভ কেএনএফের আতঙ্কে বন্ধ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

জাতীয় ডেস্ক:

পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর আতঙ্কে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ বান্দরবানের রোয়াংছড়িসহ দুর্গম বিভিন্ন পাড়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এতে শিক্ষাবঞ্চিত হচ্ছে দুর্গম বিভিন্ন পাড়ার পাঁচ শতাধিক শিশু। শুধু তা-ই নয়, অপহরণ ও চাঁদাবাজির আতঙ্কে ব্যাহত হচ্ছে সড়ক সংস্কারসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড।

জানা যায়, পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের অত্যাচার-নির্যাতনের ভয়ে বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার দুর্গম বিভিন্ন পাড়ার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে অন্যত্র। শুধু তা-ই নয়, তাদের ভয়ে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে ক্যপ্লাং পাড়া, খামতাং পাড়া, পাইক্ষ্যং পাড়াসহ রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার বেশ কয়েকটি পাড়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাদের ভয়ে স্কুলে যেতে পারছেন না শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এর ফলে শিক্ষাবঞ্চিত দুর্গম পাড়ার পাঁচ শতাধিক শিশু।

ক্ষামতাং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রেবেক বম বলেন, ‘পাড়ার অনেক মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। এলাকায় এখন অনেক বাচ্চা নেই, আমরাও স্কুলে যেতে পারি না। তিন মাসের বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ রয়েছে।’

ক্যপ্লাং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা জানান, পাড়ায় কোনো মানুষ নেই, রাস্তাঘাটে চলাচলে সমস্যা। শিক্ষকরা ভয়ে আসেন না, তাই অনেক দিন ধরে স্কুল বন্ধ।’

শুধু তা-ই নয়, অপহরণ আর চাঁদাবাজির কারণে রুমা ও রোয়াংছড়ি সড়কে পরিবহন চলাচলও বন্ধ রয়েছে। সড়ক সংস্কারসহ সরকারি বিভিন্ন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডও বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকরা কাজ করতে গেলে তাদের ধরে নিয়ে মারধর করায় ভয়ে তারা কাজে যেতে ভয় পাচ্ছেন। অনেকে কাজ ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন।

সড়ক সংস্কার কাজে ব্যবহৃত এক্সকাভেটরের চালক মো. হাসান বলেন, ‘রোয়াংছড়ি রুমা সড়কে কাজে যাওয়ার সময় অস্ত্রধারী ৬-৭ জন সন্ত্রাসী এসে আমাদের গাড়ির চাবি নিয়ে গেছে। গাড়ির তার ছিঁড়ে দিয়ে টাকা-পয়সা নিয়ে গেছে। তাই ওখানে কাজে যেতে ভয় করছে। ওখানে নিরাপত্তা নেই।’

রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহ্লা অং বলেন, কেএনএফের ভয়ে দুর্গম এলাকায় সরকারি উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। পরিবহন চলাচল করতে পারছে না। মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক কাজ করছে।

বান্দরবান সদর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মাহামুদুল হাসান পিএসসি বলেন, ‘কুকি চিন বিভিন্ন পাড়া থেকে পিছু হটেছে। বর্তমানে তারা পাইক্ষ্যং পাড়ায় অবস্থান করছে বলে জানতে পেরেছি। তবে দুর্গম এলাকায় মানুষের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলমান রাখতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে মিলে সেনাসদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।’

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে নাথান বমের নেতৃত্বে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে আত্মপ্রকাশ করে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন