হোম অন্যান্যসারাদেশ মনিরামপুরে ২৪ ঘন্টায় ১২ ঘন্টারও বেশি সময় থাকে না বিদুৎ সরবরাহ : বিপাকে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা

রিপন হোসেন সাজু, মনিরামপুর (যশোর):

বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে মনিরামপুরে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। চলতি এইচএসসি পরিক্ষার্থীরা পড়েছে আরও বেশি বিপাকে। ২৪ ঘন্টায় ১২ ঘন্টারও বেশি সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকছে না। পৌর শহরের বাইরে গ্রামা লে বিদ্যুৎ সরবরাহ আরও বেশি নাজুক।

যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ সূত্রে জানা যায়, দিনরাত মনিরামপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকছে ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা। এর মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় মনিরামপুর পৌর শহরে একটু বেশি সরবরাহ করা হচ্ছে। তাও আবার এক নাগাড়ে বেশিক্ষণ নয়, সর্বোচ্চ এক থেকে দুই ঘন্টা। অন্যদিকে পৌর শহরের বাইরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুতের লোডশেডিং আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফলে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।

এ দিকে গত ১৭ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষা। জয়পুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, বিদ্যুৎ কখন আসে তা মানুষ আর খোঁজ খবর রাখে না। বিদ্যুৎ না থাকায় ভাদ্র মাসের ভ্যাপসা গরমে জনজীবন নাকাল হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া প্রচন্ড গরমের কারণে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। এমনটি জানা গেছে দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পৌরসভা বালিকা বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সাথে আলাপ করে। পৌর শহরের প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল এলাকার এইসএসসি পরীক্ষার্থী মাহিমা সুলতানা বলেন, শুধু দিনে নয়, রাতের বেলা আরও বেশি লোডশেডিং হওয়ায় লেখাপড়ায় বেশ বিঘ্ন ঘটছে।

পৌর শহরের মহাদেবপুরে অবস্থিত শিল্প প্রতিষ্ঠান জেএস স-মিল অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট প্লান্টের ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান মিঠু বলেন, বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে প্লান্টের উৎপাদন অনেক হ্রাস পেয়েছে। আবার পৌর শহরেরে আল আমিন মেটালের স্বত্বাধিকারী মতিয়ার রহমান বলেন, লোডশেডিং বৃদ্ধির ফলে নির্ধারিত সময়ে মালামাল তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তুলসি বসু বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসা করা দুরুহ হয়ে পড়েছে। আর এ ধরনের চিত্র উপজেলার নেহালপুর, রাজগঞ্জ, চিনাটোলা, কুয়াদা, ঢাকুরিয়া, রোহিতা, হরিহরনগর, মশ্মিমনগর, ঝাঁপা, চালুয়াহাটি, মনোহরপুরসহ প্রতিটি এলাকায়। ফলে জনসাধারণের মধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিরুদ্ধে দিন দিন অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ ব্যাপারে যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ (মনিরামপুর) এর জেনারেল ম্যানেজার আবদুল লতিফ বলেন, সমিতির আওতাধীন (মনিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর, নড়াইল, লোহাগড়া, কালিয়া) পিক আওয়ার এবং অফপিক আওয়ারে গড়ে প্রতিদিন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে প্রয়োজন ১৬৫ মেগাওয়াট। কিন্তু তার বিপরীতে জাতীয় গ্রিড থকে পাওয়া যাচ্ছে পিক আওয়ারে ১১০ এবং অফপিক আওয়ারে ৭৫৪ মেগাওয়াট। তার ওপর বেশ কিছু স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখে লাইন মেরামত কাজ চলছে। ফলে লোডশেডিং একটু বেশি হচ্ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন