জাতীয় ডেস্ক:
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দীর্ঘ তিন ঘণ্টা পর রাজধানীর হাতিরঝিলের বেগুনবাড়ি এলাকায় কয়েকশ ফুট উঁচু বৈদ্যুতিক টাওয়ারের চূড়ায় ওঠা সেই নারী নেমে এসেছেন। পরে টাওয়ারে ওঠার কারণ জানান তিনি।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি নিজেই টাওয়ার থেকে নেমে আসেন। তার নাম খুকুমণি। গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ।
টাওয়ার থেকে নেমে খুকুমণি জানান, মনের ক্ষোভ ও দুঃখ থেকে টাওয়ারে উঠে বসে ছিলেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, হাতিরঝিলের নিরাপত্তাকর্মীরা প্রায়ই তাকে হেনস্তা এবং মারধর করেন। সেই দুঃখে তিনি টাওয়ারে উঠে বসে ছিলেন।
এত বলার পরও টাওয়ার থেকে না নামার কারণ জানতে চাইলে খুকুমণি বলেন, টাওয়ারে ওঠার কিছুক্ষণ পর হাতিরঝিলের দুই পাশে মানুষ জমে গিয়েছিল। সবাই তাকে দেখছে, এতে বেশ মজা পাচ্ছিলেন তিনি। তাই ঘণ্টাখানেক টাওয়ারের ওপর বসে ছিলেন তিনি।
এর আগে বিকেলে ওই নারীকে টাওয়ারের চূড়ায় বসে থাকতে দেখেন আশপাশের মানুষ। পরে তারা পুলিশে খবর দেন।
বিকেল ৩টার দিকে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, বৈদ্যুতিক টাওয়ারের চূড়ায় বসে আছেন এক নারী। অনেক বলার পরও তিনি নেমে না আসায় তারা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।
পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ নৌকা নিয়ে টাওয়ারের কাছে গিয়ে মাইকিং করে অনুনয়-বিনয় করার তিন ঘণ্টা পর নিজ থেকেই নেমে আসেন ওই নারী। টাওয়ার থেকে নিজে নিজে নেমে এলেও পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাকে নৌকায় করে তীরে নিয়ে আসেন।
টাওয়ার থেকে নামার পর খুকুমণি জানান, আড়াই মাস আগে ঢাকায় এসেছেন। হাতিরঝিল এলাকায় থাকেন তিনি। তার চার মেয়ে ও দুই ছেলে আছে।
উদ্ধারকাজে অংশ নেয়া হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আওলাদ হোসেন বলেন, খুকুমণি মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। তাকে বোন বলে ডাকার পর, অনেক অনুরোধের পর নামানো গেছে। প্রায় তিন ঘণ্টা তিনি বৈদ্যুতিক টাওয়ারে অবস্থান করেছেন। টাওয়ারটির প্রতিটি বিদ্যুতের লাইন ১ লাখ ৩২ হাজার ভোল্টের। তবে বিদ্যুৎ লাইন থেকে সামান্য কয়েক ফুট দূরে থাকায় তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হননি।’
ফায়ার সার্ভিসের তেজগাঁও জোনের সিনিয়র স্টেশন মাস্টার নাজিম উদ্দিন সরকার বলেন, শুরুতে অনেক অনুরোধের পরও তিনি না নামলে বিদ্যুতের লাইন বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু ডিপিডিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই লাইন বন্ধ করলে রাজধানীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। পরে উপায় না দেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাকে অনেক অনুরোধ করে নামানো হয়। নেয়া হবে না। মুন্সিগঞ্জে তার এলাকার থানায় যোগাযোগ করে অভিভাবকের হাতে তুলে দেয়া হবে।