মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
অভয়নগরের নওয়াপাড়ার ঘাট শ্রমিক থেকে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে আউট সোর্সিংয়ে পিয়ন পদে চাকরি করে কোটিপতি বনে গেছেন মনিরামপুরের শরিফুল ইসলাম। এর মধ্যে তিনি মনিরামপুর পৌর এলাকায় ২৫ শতক জমির উপর অর্ধকোটি টাকা দিয়ে নির্মাণ করেছেন বহুতল ভবন। ক্রয় করেছেন বেশ কয়েক বিঘা জমি। এছাড়াও তার এক চাচাত ভাইয়ের মাধ্যমে টাকা দিয়ে উচ্চ হারে সুদ নিয়ে নিঃস্ব করছেন লোকজনদের। শরিফুল ইসলামের কর্মকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ একই গ্রামের আজহার আলী মোল্যা দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত যশোর কার্যালয়সহ বিভিন্ন দফতরে বৃহস্পতিবার অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, মনিরামপুরের নেহালপুর গ্রামের সাহেব আলী মোল্যার ছেলে শরিফুল ইসলাম এক সময় নওয়াপাড়ায় ঘাট শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ২০১২ সালে বিল কপালিয়ায় টিআরএম প্রকল্পে সাবেক হুইপ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের মারপিট, সরকারি গাড়িতে অগ্নি সংযোগ, পুলিশকে মারপিটের মামলার আসামী। পরবর্তীতে তিনি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে পিয়ন পদে যোগদান করেন। এরমধ্যে তিনি কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। গড়ে তুলেছেন বহুতল ভবন, হয়েছেন বহুদামী কয়েক বিঘা জমির মালিক। শরিফুল ইসলাম মনিরামপুরের নেহালপুর গ্রামের আজহার আলীর কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন ৪০ শতক জমি। ৭ লাখ টাকা দিয়ে ১৩ শতক জমি ক্রয় করেন মোশারফ মোল্যা ও আতিয়ার মোল্যার কাছ থেকে। নওয়াপাড়ার হাচান মাস্টারের কাছ থেকে ৪২ শতক জমি ক্রয় করেছেন ১৭ লাখ টাকা দিয়ে। মনিরামপুরের পাঁচাকড়ি গ্রামের মুকুল গাজীর কাছ থেকে ১৭ শতক জমি ক্রয় করেছেন সাড়ে ১৭ লাখ টাকা দিয়ে। এছাড়া মনিরামপুর পৌর এলাকার জয় নগর গ্রামের ২৫ শতক জমি কিনে ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন বহুতল ভবন। শরিফুল ইসলাম নেহালপুর গ্রামের তরুন পরামানিকের কাছ থেকে ২১ শতক, রেজাউল ইসলামের কাছ থেকে ৪২ শতক, পাঁচাকড়ি গ্রামের জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে ১৮ শতক জমি বন্ধক নিয়েছেন কয়েক লাখ টাকা দিয়ে। এছাড়া শরিফুল ইসলাম তার চাচাতো ভাই রবির মাধ্যমে বিপদগ্রস্থ ব্যক্তিদের টাকা দিয়ে উচ্চ হারে সুদ নিচ্ছেন। ১ লাখ টাকা নিলে বছরে আসল বাদে ২৫ হাজার টাকা লাভ পরিশোধ করতে হয়। মন্ত্রণালয়ে আউট সোর্সিংয়ে পিয়ন পদে চাকরি করে শরিফুল কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি অতিরিক্তি মহাপুলিশ পরিদর্শক, সিআইডি ঢাকা ও সিআইডি পুলিশ সুপার যশোর, কর কমিশনার খুলনাকে অনুলিপি দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে এ্যাডভোকেট ইসতিয়াক আহমেদ জানিয়েছেন, আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন আইনের চোখে বড় ধরনের অপরাধ। এ ধরণের অপরাধ তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন স্ব-উদ্যোগে নোটিশ করে যে কারো কাছে হিসাব চাইতে পারে। আয়ের সাথে সম্পদ অর্জনের মিল না থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে দুদক।