অনলাইন ডেস্ক:
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছেন মাদরাসা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (অর্থ) মো. আবুল বাসার। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে মাদরাসা ক্যাম্পাসে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে অনিয়ম, বাণিজ্যের অভিযোগে এ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, মাদরাসার সভাপতি তাড়াশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনিসহ ম্যানেজিং কমিটি সদস্য উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান ৪ পদে নিয়োগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে আগেই ৬০ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছেন।
জানা যায়, চারপদে নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ পদে ৮ জন, উপাধ্যক্ষ পদে ৫ জন, ল্যাব সহকারী পদে ৮ জন ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ৯ জন প্রার্থী আবেদন করেন। শনিবার এসব পদের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ সময় তাড়াশ সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার সভাপতি, তাড়াশ উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি, ডিজির প্রতিনিধি মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকার উপপরিচালক (অর্থ) মো. আবুল বাসার, ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল সাদিকুর ইসলাম, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খানসহ পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে উপস্থিত হন।
এ সময় ৪ পদে ৪ পরীক্ষার্থীকে রেখেই প্রশ্নপত্র তৈরি করেন। পরীক্ষার্থীদের নিয়ে প্রশ্নপত্র তৈরির করায় অন্যান্য পরীক্ষার্থীরা দেখে ফেলেন। বিষয়টি ডিজির প্রতিনিধিকে অবগত করেন। এমনকি ৪ পদে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ডিজির প্রতিনিধির কাছে অভিযোগ করেন। ডিজির প্রতিনিধি তাৎক্ষণিকভাবে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন।
নিয়োগ বাণিজ্যে বাধা দেওয়ায় নিয়োগ বোর্ডে রাখা হয়নি ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাককে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজকের এই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পর্কে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। এছাড়াও আমি বলেছি নিয়োগ কার্যক্রম হবে একদম স্বচ্ছ। টাকার বিনিময়ে কাউকে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এ সকল কারণে আমাকে তারা নিয়োগ বোর্ডে রাখেননি এবং নিয়োগ সম্পর্কে কিছু জানাননি।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান বলেন, নিয়োগে কোনো বাণিজ্য হয়নি। তবে নিয়োগ পরীক্ষা কেন বাতিল হল- সে বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলেনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তাড়াশ ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার সভাপতি ও তাড়াশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাকের চেয়ে অনেক শিক্ষিতদের নিয়োগ বোর্ডে রাখা হয়েছে। এছাড়াও এখানে কোনো নিয়োগ বানিজ্য হয়নি। তবুও অভিযোগ ওঠায় ডিজির প্রতিনিধি নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করে দিয়েছেন।
ডিজির (মহাপরিচালক) প্রতিনিধি মাদরাসা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (অর্থ) মো. আবুল বাসার বলেন, আমি এখানে আমাদের মহাপরিচালক মহোদয়ের প্রতিনিধি হিসেবে এসেছি। মহাপরিচালক স্যারের কঠিন নির্দেশনা আছে সবকিছু স্বচ্ছ ও সুন্দর হতে হবে। যেহেতু এখানে নিয়োগের আগেই প্রার্থী চুড়ান্ত ও টাকা পয়সা লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠায় এই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করলে প্রশ্ন থেকে যাবে। এজন্যই আজকের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন করে এই নিয়োগ পরীক্ষা সম্পূর্ণ করতে হবে।