বাণিজ্য ডেস্ক :
যুক্তরাজ্যে চলছে রেল ধর্মঘট। ৪০ হাজার রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ ছেড়ে স্থান নিয়েছে প্ল্যাটফর্মে। দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, চলমান ধর্মঘটে ভেঙে গেছে বিগত ৩০ বছরের রেকর্ড।
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কাজ ছেড়ে ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছে রেলওয়ে কর্মচারীরা। চলতি সপ্তাহের শনিবার (১৮ জুন) ও মঙ্গলবার (২১ জুন) ধর্মঘট পালন করছেন তারা। ধর্মঘটের কারণে এক রকমের বন্ধ হয়ে গেছে লন্ডনের পাতাল রেল সার্ভিস।
ধর্মঘটের ব্যাপারে দেশটির সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নগুলো বলছে, এটি কেবল শুরু। যে হারে দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী আকার ধারণ করছে, এতে করে শিক্ষক, ডাক্তার, মেথর সবাই নিজ নিজ দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে আসবে। উল্লেখ্য, চলতি মাসে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
রেল, নৌ ও পরিবহন শ্রমিকনেতা মাইক লিঞ্চ বলেন, ‘শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে হবে। অনেকেরই চাকরি চলে যাচ্ছে। এসব বন্ধ করে চাকরির নিশ্চয়তা দিতে হবে। চাকরির শর্ত শিথিল করে শ্রমিকদের চুক্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আমাদের দাবি মেনে নেয়া হলে, কথা দিচ্ছি ব্রিটিশ অর্থনীতিতে কোনো ধরনের ব্যাঘাত ঘটানো হবে না। আগামী গ্রীষ্ম মৌসুমে ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।’
দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলছেন, ইউনিয়নগুলো কাজের থেকে আকাজ করছে বেশি। এসব সংগঠন শ্রমিকদের ক্ষতি করছে। শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে জাতীয় ক্ষতি করার ধান্ধায় আছে ইউনিয়নগুলো।
সমস্যা সমাধান না করে সমালোচনা করে যাওয়ায় বিরোধীদলের রোষাণলে পড়েছেন বরিস জনসন।
ধর্মঘট নিয়ে করা জন জরিপে দেখা যায়, ধর্মঘটের ব্যাপারে ব্রিটিশরা দ্বিধাবিভক্ত অবস্থায় আছেন। দেশের অর্ধেক জনসাধারণ চলমান ধর্মঘটের বিরোধিতা করেছেন। ধর্মঘটের সমর্থন জানিয়েছেন, এক তৃতীয়াংশ মানুষ।
এদিকে চলমান ধর্মঘটে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অনেকেই কাজে বের হয়ে যেতে না পেরে বাসায় ফিরে আসছেন। যুক্তরাজ্যের সাধারণ মানুষ জানায়, ‘এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। এভাবে চলতে থাকলে দেশের স্বাভাবিক কার্যক্রম শ্লথ হয়ে পড়বে।’
যুক্তরাজ্য এখনো করোনার ধাক্কা সামলে উঠে দাঁড়াতে পারেনি। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত। উপরি আঘাত হিসেবে আছে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত জটিলতা ও অভ্যন্তরীণ বেকারত্ব সমস্যা। এতে করে দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতি। বেড়েছে দ্রব্যমূল্য, বাড়েনি মানুষের বেতন। এরই ফলাফল এ চলমান ধর্মঘট।
সূত্র: রয়টার্স