আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বাবাকে গুলি করে হত্যা করেছে দুই বছর বয়সী ছেলে। নিহত ব্যক্তির বাড়িতে গুলিভর্তি একটি বন্দুক অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে ছিল। অবুঝ শিশু সেই বন্দুক হাতে নিয়ে গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় শিশুটির মায়ের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। সোমবার (৬ জুন) স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে এএফপি।
খবরে বলা হয়েছে, নিহত ওই ব্যক্তির নাম রেগি মারবি। ফ্লোরিডার অরল্যান্ডো শহরের কাছেই তার বাড়ি। গত ২৬ মে তার নিজ বাড়িতেই এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর জরুরি সাহায্য চেয়ে বাড়িটি থেকে পুলিশকে ফোন করা হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে মারবিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মেঝেয় পড়ে থাকতে দেখেন পুলিশ কর্মকর্তারা। স্ত্রী মারি আয়ালা তখন প্রাণপণে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টার করছিলেন।
তৎক্ষণাৎ তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ কর্মকর্তারা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরপরই তার মৃত্যু হয়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছিল, ২৬ বছর বয়সি ম্যাবরি আত্মহত্যা করেছেন। তবে পরবর্তীতে ওই দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে বড়জন (৫) তদন্ত কর্মকর্তাদের জানায়, ট্রিগারটি চেপেছিল তাদের দুই বছরের ছোট ভাই।
এএফপি জানায়, এ ঘটনায় আদালতে দাখিল হওয়া নথি থেকে জানা যায়, বন্দুকটি ছিল একটি ব্যাগে যা মেঝেতে ফেলে রেখেছিলেন ম্যাবরি। তার দুই বছরের ছেলে ব্যাগের কাছে এসে বন্দুক হাতে তুলে নেয়। এরপর পেছন থেকে তার বাবার পিঠে গুলি করে। ম্যাবরি তখন কম্পিউটারে ভিডিও গেম খেলছিলেন।
সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দুকটি অরক্ষিত অবস্থায় শিশুটির মা ২৬ বছর বয়সী মেরি আয়ালার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। অরেঞ্জ কাউন্টির শেরিফ জন মিনা বলেছেন,বন্দুকটি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। ফলে এটা সহজেই দুই বছর বয়সি শিশুটির হাতের পড়ে। যার ফলাফল এ ট্রাজেডি।
যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক সময়ে গোলাগুলির ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত দুই শতাধিক বন্দুক হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আড়াই শতাধিক মানুষ। এসব হামলায় আহত হয়েছেন এক হাজারের বেশি। ওয়াশিংটন পোস্টের এক পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের ৫ মাসে বন্দুক হামলা, নয় বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্রের কোথাও না কোথাও ঘটছে বন্দুক সহিংসতা। রীতিমতো বন্দুক হামলার দেশে পরিণত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্কুল, হাসপাতাল এমনকি গোরস্থান। দেশটির কোনো জায়গায়ই এখন নিরাপদ নয়। একের পর এক হামলায় হুমকির মুখে জননিরাপত্তা।