অনলাইন ডেস্ক:
সমাজের ‘হোয়াইট কালার’ শ্রেণির বাবুদের কঠোর সমালোচনা করে তাদের কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জনস্বার্থবিরোধী মহলকে নেতিবাচক তৎপরতা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের মৃত্যুবার্ষিকীতে বক্তব্য প্রদানকালে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন বঙ্গবন্ধু।
বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘স্থানীয় লোকেরা আবারও দল পাকাবার চেষ্টা করছে এবং সুযোগ-সুবিধা দাবি করছে।’ সময় থাকতে এদের নিবৃত্ত করা না হলে দেশের সামনে বিপদ আসতে পারে বলে তিনি সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। জনস্বার্থবিরোধী মহল আবারও তৎপর হয়ে উঠেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ কারণে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে দেশের বিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু। তিনি জানান, জনগণ দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে এলে শ্মশানের বুকে আবারও সোনার বাংলা গড়ে উঠবে।
২৭ এপ্রিল শেরেবাংলার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অফিসে এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দিচ্ছিলেন। স্বার্থবাদী মহলের গণবিরোধী কার্যকলাপের বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা— কয়েক মাস যেতে না যেতেই মানুষ তার আত্মদানের কথা ভুলে স্বার্থান্বেষী হয়ে উঠলো। সমাজের ‘হোয়াইট কালার’ শ্রেণির বাবুদের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্থানীয় লোকেরা আবারও দল পাকাবার চেষ্টা করছে এবং সুযোগ-সুবিধা দাবি করছে। সময় থাকতে এদের নিবৃত্ত করা না হলে দেশের সামনে বিপদ আসতে পারে।’
অসাধু ব্যবসায়ী
অসাধু ব্যবসায়ীদের কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘বিদেশ থেকে আমদানি করা খাদ্যশস্য যোগাযোগের অভাবে সময় মতো জনগণের কাছে পাঠাতে যে বিলম্ব হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা সেই সুযোগ নিচ্ছে। তারা মানুষের দুঃখ-দুর্দশার মাঝেও টাকা বানাচ্ছে। তারা সংযত না হলে জনগণ অসাধু ব্যবসায়ীদের অর্থ ছিনিয়ে নিতে বাধ্য হবে। আর এই পরিস্থিতির উদ্ভব হলে আমি জনগণের সঙ্গেই থাকবো।’
অপপ্রচার
সরকারের বিরুদ্ধে ফিসফিস করে অপপ্রচার চালানোর বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং শিল্প জাতীয়করণ সম্পর্কে গোপনে অপপ্রচার চলছে, কিন্তু আমাদের সহনশীলতাকে দুর্বলতা মনে করলে ভুল করা হবে। জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে।’ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের অপব্যবহার কিছুতেই তিনি হতে দেবেন না।
শ্রমিকদের প্রতি
শ্রমিকদের প্রতি কঠোর পরিশ্রম ও উৎপাদন বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘ব্যাংক-বিমাসহ যেসব শিল্প জাতীয়করণ করা হয়েছে, সেগুলো এখন সাড়ে সাত কোটি মানুষের সম্পত্তি। কাজে ফাঁকি দিয়ে সেগুলো নষ্ট করতে দেওয়া হবে না। বন্ধুরাষ্ট্র থেকে খাদ্যশস্য ও প্রয়োজনীয় জিনিস এনে সরকার জনগণের অভাব মেটাতে চেষ্টা করছে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সবার ঊর্ধ্বে। সাহায্যের বিনিময়ে আমরা দেশের স্বাধীনতা কিছুতেই বিকিয়ে দিতে পারবো না।’
পাক-ভারত আলোচনা
পাক-ভারত আলোচনায় বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে বলে উল্লেখ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। ২৮ এপ্রিল ইন্দিরা গান্ধীর সম্মানে নয়া দিল্লিতে বিদেশি সাংবাদিকদের দক্ষিণ এশিয়া সমিতি আয়োজিত মধাহ্নভোজে বাসসের এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এই কথা বলেন।