জাতীয় ডেস্ক:
বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, রক্তাক্ত নয়, হাতপাখার প্রার্থীকে পেছন থেকে ঘুষি মারা হয়েছে।
এ সময় সাংবাদিকের পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে সিইসি বলেন, হাতপাখার প্রার্থী কি ইন্তেকাল করেছেন?
সোমবার (১২ জুন) বিকেলে দুই সিটির ভোটগ্রহণ শেষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন তিনি।
বরিশাল সিটি নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলা বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে সিইসি বলেন, রক্তাক্ত নয়, হাতপাখার প্রার্থীকে পেছন থেকে ঘুষি মারা হয়েছে। যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বরিশালে নির্বাচন পরবর্তী কোনো সহিংসতা যেন না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।
দু-চারটি বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে সিইসি বলেন, এটা আশাব্যাঞ্জক।
দুই সিটিতে নির্বাচন সার্বিকভাবে সুশৃঙ্খল ও আনন্দমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে মন্তব্য তিনি বলেন, খুলনায় অনুমানিক ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত এবং বরিশালে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট কাস্ট হয়েছে।
এর আগে সকাল ৮টায় দুই সিটিতে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ শেষ হয় বিকেল ৪টায়। বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশনের কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। তাদের বেশির ভাগই নারী। এবারই প্রথম ইভিএমে ভোট দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তরুণ ভোটাররা। এদিকে পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এবারই প্রথম খুলনা ও বরিশাল সিটির সব কেন্দ্রে ভোট নেয়া হয় ইভিএমে। প্রতিটি কেন্দ্রে ছিল কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন থেকে ভোটগ্রহণ পরিস্থিতি মনিটরিং করেন কর্মকর্তারা।
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচন
খুলনা নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে ২৮৯ ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোটকেন্দ্র সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য ২ হাজার ৩১০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
এ নির্বাচনে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ এবং পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন। ভোট শেষে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে।
খুলনায় মেয়র পদে ৫ জন এবং ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরই মধ্যে নগরীর ১৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
খুলনার মেয়র প্রার্থী যারা–
তালুকদার আব্দুল খালেক (আওয়ামী লীগ, নৌকা প্রতীক), মো. আ. আউয়াল (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হাত পাখা), মো. শফিকুল ইসলাম মধু (জাতীয় পাটি, লাঙ্গল), এস এম শফিকুর রহমান (স্বতন্ত্র, টেবিল ঘড়ি) এবং এস এম সাব্বির হোসেন (জাকের পার্টি, গোলাপ ফুল)।
বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচন
এ নির্বাচনে ১২৬টি ভোটকেন্দ্রের ৮৯৪টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ চলে। ১ হাজার ১৪৬টি সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া। এতে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন।
বরিশালের মেয়র প্রার্থী যারা–
আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আবদুল্লাহ (নৌকা), জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম (হাতপাখা), জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুল আহসান (ঘড়ি), আসাদুজ্জামান (হাতি) ও আলী হোসেন (হরিণ)।
এ ছাড়া বরিশাল সিটির ৩০টি ওয়ার্ডে ১১৮ জন সাধারণ এবং ৪২ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।