অনলাইন ডেস্ক:
প্রকাশ্যে খুন, মারামারি, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে অস্থির খুলনা। নিরাপত্তা ও অপরাধী শনাক্তে নগরীতে সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশের উদ্যোগে কয়েকদফায় ১৮৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করলেও দেখভালের অভাবে অকেজো তিন-চতুর্থাংশই। ফলে মিলছে না কাঙ্খিত সুফল। এবার নগরীকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছেন খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, ২০১৪ সালে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মেট্রোপলিটন পুলিশকে ৮৮টি ক্যামেরা দেয়া হয়। সে সময় নগরীর শিববাড়ি, নিউমার্কেট, ময়লাপোতা, ডাকবাংলো মোড়, পিকাচার প্যালেস মোড়সহ অন্ত্যত ১২টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৮টি করে ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ২০২০-২১ সালে নগরীর সকল থানা এলাকার আরও ১০ থেকে ১২টি স্থানে ৯৬টি ক্যামেরা স্থাপন করে মেট্রোপলিটন পুলিশ। তবে গুরুত্ব আর দেখভালের অভাবে প্রথম ধাপের শতভাগ ও দ্বিতীয় ধাপের অর্ধেকের বেশি ক্যামেরা অকেজো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক সদস্য বলেন, বেসরকারি সিসি ক্যামেরার যেমন মনিটরিং থাকে সরকারি ক্যামেরায় তেমন থাকে না। শহরের অধিকাংশ মোড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হলেও দেখাশোনার কেউ নেই। যে যার মতো ডিউটি শেষ করে চালে যায়। সে সময় কেউ ঢিল ছুড়লে বা নষ্ট করলেও দেখার কেউ থাকে না। আর নষ্ট ক্যামেরা মেরামত করারও কেউ নেই। একমাত্র অবহেলার কারণে এত টাকার জিনিস নষ্ট হয়েছে।
নগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকার বাসিন্দা আল-আমিন সিকদার বলেন, কয়েকদিন আগে ময়লাপোতা থেকে হেলাতলা বাজারের দিকে যাওয়ার পথে আমার আত্মীয়ের কাছ থেকে প্রতারকরা টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। সে সময় আমরা পুলিশে অভিযোগ করি। শুধুমাত্র সড়কের পাশে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরা থাকার কারণে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আমরা আসামি শনাক্ত করতে পেরেছি। আর প্রতিটি মোড়ে সরকারি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করলে অপরাধীদের ধরা সহজ হবে।
এ বিষয়ে খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল বলেন, দেশের সবখানে প্রযুক্তির ছোয়া লেগেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বহির্বিশ্বের মতো খুলনাকেও আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অত্যাধুনিক ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। ওলি-গলিতেও ক্যামেরা থাকবে। এতে অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করা যাবে।
সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী মো. সাইদুর রহমান বলেন, সংসদ সদস্যের বরাদ্দ তহবিল থেকে তার আওতাভুক্ত প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩২টি করে ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। ইতোমধ্যে ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুতই কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে স্থানীয় কাউন্সিলরদের। প্রথম ধাপে নগরীর ১৭, ২০, ২৪সহ ৫টি ওয়ার্ডে ক্যামেরা স্থাপন হবে। এগুলো শেষ হলে বাকি ওয়ার্ডে কাজ শুরু হবে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়টি আমরা দীর্ঘদিন থেকে আলোচনা করে আসছি। ইতিমধ্যে খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্যের সাথেও কথা হয়েছে। তিনিও তার এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করবেন। আর খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্যের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। ক্যামেরা স্থাপন হলে অপরাধের প্রবনতা কমবে এবং অপরাধী শনাক্তে সহায়ক হবে।