হোম অন্যান্যসারাদেশ সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ৩০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ৩০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

কর্তৃক
০ মন্তব্য 81 ভিউজ

নিজস্ব প্রতিনিধি :

সাতক্ষীরা শ্যামনগরের শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ৩০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে ও শিক্ষার মান বাড়াতে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে স্লীপ খাতে বরাদ্দের টাকা হতে ডিজিটাল ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন। নিয়ম অনুযায়ী স্লীপের টাকা উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিবেন। সেখান থেকে প্রধান শিক্ষক, সভাপতি সহ সংশিষ্টরা বাজার যাচাই বাচাই করে হাজিরা মেশিন কিনে ভাউচার উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিবেন। কিন্তু শিক্ষা অফিসারের দূর্নীতির কারণে তা সম্ভব হয়নি।

সাতক্ষীরা শ্যামনগর শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, উপজেলায় ১৯১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর ধ্যে ১৫১টি স্কুলে স্লীপ খাতে বরাদ্দ ছিল ৫০ হাজার টাকা । বাকী ৪০ টি স্কুল সি,এফ,এস এর আওতাধিন ছিল। শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশ মোতাবেক ওই স্লীপের বরাদ্দ ৫০ হাজার টাকা স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু শিক্ষা অফিসার নির্দেশনা না মেনে টাকা নিজ অ্যাকাউন্টে জমা রাখেন ।

পশ্চিম শ্রীফলকাটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসেন আলী সহ কয়েক জন শিক্ষক জানান, স্লীপের বরাদ্দ ৫০ হাজার টাকা থেকে শিক্ষা অফিসার তাদের সাথে আলোচনা ছাড়াই ডিজিটাল ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন কেনা বাবদ ২৫ হাজার টাকা সহ আরো ২ হাজার ৫ শত টাকা কেটে নিয়ে স্ব -স্ব বিদ্যালয় অ্যাকাউন্টে ২২ হাজার ৫ শত টাকা জমা দেন।

যা স্কুলের অ্যকাউন্ট চেক করলে প্রমান মিলবে। শিক্ষকরা আরো বলেন,জেডকেটিকো মডেল নং কে ৫০ এ নামীয় ডিজিটাল হাজিরা মেশিন নিম্ম মানের। মেশিনটির বর্তমান বাজার মূল্য ৬ হাজার ৮ শত টাকা। অথচ উপজেলা শিক্ষা অফিসার কিছু শিক্ষকদের যোগসাজশে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনা থেকে প্রায় সাড়ে ২৭ লক্ষাধিক টাকা ও আরো অতিরিক্ত ৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা আরো জানান, শিক্ষা অফিসার নিজের দূর্নীতি ঢাকতে সহকারী শিক্ষা অফিসার আজহারুল ইসলামকে দিয়ে মন গড়া প্রত্যয়ন তৈরী করে শিক্ষকদের বদলির ভয় দেখিয়ে শিক্ষকদের সই করিয়ে নেন।এসময় শিক্ষকরা প্রত্যয়ন পত্রে কি লেখা আছে তা দেখতে চাহিলে ধমক দিয়ে বলেন, দেখা লাগবে না স্বাক্ষর করে দেন। সহকারী শিক্ষা অফিসার এখানে ক্ষ্যান্ত হননি, তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ষ্ট্যাম্প করে দিতে চাপও সৃষ্টি করেন। হায়বাতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, উপজেলায় কয়েকটি বিদ্যালয় স্লীপের আওতাধীন নয়। আমরা সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিস থেকে ৪৫ হাজার টাকার চেক নিয়ে নিজেরাই বাজার থেকে ৭ হাজার টাকা মূল্যে হাজিরা ম্যাশিন কিনি। সহকারী শিক্ষা অফিসার আজহারুল ইসলামকে প্রত্যায়নের বিষয় জানতে চাহিলে তিনি বলেন, স্লীপের টাকা ও হাজিরা ম্যাশিন বাবদ শিক্ষকের কাছ থেকে কোন প্রত্যায়ন নেয়া হয়নি বা ষ্ট্যাম্পের কথাও বলেনি বলে জানান।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি স্লীপের বরাদ্দোর টাকা নিজ অ্যকাউন্টে রাখার বিষয় সত্যতা স্বীকার করে প্রতিবেদককে বলেন,হাজিরা মেশিন বাজার মূল্য ৬ হাজার ৮ শত টাকা ঠিকই। কিন্তু জেডকেটিকো মডেল নং কে৫০এ মেশিনটি তিন বছরের সার্ভিস দেয়া শর্তে ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।

এদিকে শ্যামনগর উপজেলা ২২নং ভৈরবনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান. গেল বছর বরাদ্দকৃত স্লীপের ৫০ হাজার টাকা থেকে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন বাবদ উপজেলা শিক্ষা অফিসার, আক্তারুজ্জামান ২৫ (পঁচিশ হাজার) টাকা কর্তন করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখনও পর্যন্ত বিদ্যালয়ে আমরা কোন প্রকার ডিজিটাল হাজিরা মেশিন পাইনি।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ,ন,ম আবুজার গিফারী বলেন, কোন অফিসার যদি নিয়মের বাহিরে কাজ করে থাকেন সে যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। তবে কেহ যদি লিখিত অভিযোগ করেন তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন বলেন, আইনের উর্দ্ধে কেউ নন, যদি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসাররা আইন বহির্ভ’ত কাজ করে থাকেন তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাতক্ষীরা ৪ আসনের এমপি এস এম জগলুল হায়দার বলেন, ডিজিটাল ফিঙ্গার মেশিনের বাজার মূল্য ৬ হাজার ৮ শত টাকা সেখানে শিক্ষা অফিসার ২৫ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। তবে এটা অত্যান্ত দুঃখ জনক। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন