হোম ফিচার সাতক্ষীরায় পপি লাইব্রেরির কোটি টাকার নোট-গাইড বাণিজ্য মিশন! বাস্তবায়ন করছেন জামায়াতে ইসলামী নিয়ন্ত্রিত শিক্ষক সংগঠন

সংকল্প ডেস্ক :

নিষিদ্ধ ঘোষিত নোট-গাইড স্কুলে স্কুলে বিক্রি করতে কোটি টাকার বাণিজ্য করতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে একটি চক্র। আগামী ২০২৩ সাল থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন কারিকুলামের শিক্ষাক্রমকে সামনে রেখে স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী জামাত ইসলামী কর্তৃক পরিচালিত একটি শিক্ষক সংগঠন সক্রিয় এই মিশনে। তারা ‘পপি লাইব্রেরি’ নামক একটি নোট-গাইড প্রকাশক ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে আয়োজক করে আগামীকাল শনিবার ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ তারিখে সাতক্ষীরায় আয়োজন করেছে শিক্ষকদের ওরিয়েন্টেশন। পপি লাইব্রেরির ওরিয়েন্টেশন আয়োজনের কোনো সরকারি অনুমোদন নেই। এ কাজে পপি লাইব্রেরির ও জামায়াতে ইসলামী নিয়ন্ত্রিত ওই শিক্ষক সংগঠন জেলা‌ সদদের দুই জনপ্রতিনিধি ও দুই সরকারি কর্মকর্তাকে সম্পৃক্ত করে শিক্ষকদের ডেকেছেন ওরিয়েন্টেশনে। শিক্ষক এবং সাংবাদিকদের এই অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা সদরে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এক তরুণ শিক্ষককে। যিনি একটি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। সরকার নোট গাইড নিষিদ্ধ করলেও স্থানীয় পর্যায়ে এরা সরকারের চেয়ে শক্তিশালী। তারা মনে করে লেখাপড়া নোট-গাইডেই সম্ভব। মনে হচ্ছে দেখার কেউ নেই? এসবের নেপথ্যে আর্থিক বিনিয়োগ করছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘পপি লাইব্রেরি’।

এদিকে, নাম না প্রকাশ করার শর্তে জেলার একাধিক শিক্ষাবিদ ও কয়েকজন শিক্ষক সংগঠনের নেতা বলেন, জামায়াতে ইসলামীর পৃষ্টপোষকতায় জেলার কিছু সংখ্যক শিক্ষক এই অনৈতিক কাজের সাথে সম্পৃক্ত। তারা আর্থিক সুবিধা নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে।

পপি লাইব্রেরির আঞ্চলিক ম্যানেজার শেখ আবদুল হাদি বলেন, আমরা এই অনুষ্ঠানে জেলার শিক্ষকদের ২০২৩ এর নতুন কারিকুলাম বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন করাবো। আর আমাদের এমপিকে জেলার শিক্ষকরা কখনও দেখেনি তাই পরিচয় করাবো। আর সাংবাদিকদের দাওয়াত দেওয়ার দায়িত্ব নবারুণ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেককে দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিকদের দাওয়াত দেওয়ার দায়িত্ব পাওয়া নবারুণ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেক জানান, ‘আমি একটি দাওয়াতপত্র পেয়েছি মাত্র। এর বাইরে আর কিছু জানি না’।

সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহিদুর রহমান বলেন, ‘আমাকে না জানিয়ে চিঠিতে আমার নাম ছাপিয়েছে। আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি জানি না।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না’। অনুমতি না নিয়েই তারা আমার নাম দাওয়াতপত্র ছেপেছে। কোনো নোট-গাইড প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, কর্মশালা বা ওরিয়েন্টেশন করতে পারে না। নতুন কারিকুলামের শিক্ষাক্রম বিষয়ে এনসিটিবি, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কাজ করছে। আমি অনুষ্ঠানে যাবো না এবং অনুষ্ঠান বাতিল করার জন্য বলেছি’।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, এই ওরিয়েন্টেশন সম্পর্কে আমার জানা নেই। কোনো নোট-গাইড প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, কর্মশালা বা ওরিয়েন্টেশন করতে পারে না। এটি শিক্ষা অধিদপ্তরের কাজ। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি’।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন