হোম আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের ফোনে বার্তা, পিটিআই’র খবর প্রচার না করার নির্দেশ

সাংবাদিকদের ফোনে বার্তা, পিটিআই’র খবর প্রচার না করার নির্দেশ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 133 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

আর মাত্র দুই সপ্তাহ পরই পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন। তবে ভোট সামনে করে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও দল তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) নিয়ে খবর প্রকাশ ও প্রচার না করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। দেশটির বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এ অভিযোগ করেছেন। খবর আল জাজিরা।

প্রতিবেদন মতে, বেশ কয়েকজন সাংবাদিক বলেছেন, ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন সামনে করে ফোন করে ও সংক্ষিপ্ত বার্তা পাঠিয়ে পিটিআইকে নিয়ে খবর প্রচার না করতে বলা হচ্ছে।

পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লাহোরের একটি বেসরকারি নিউজ চ্যানেলের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্য নাম প্রকাশ না করে জানিয়েছেন, তাকে কিছুক্ষণ পরপর বার্তা পাঠানো হচ্ছে।

ওই সাংবাদিক জানান, গত মঙ্গলবার যখন তিনি অফিসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন হঠাতই তার স্মার্টফোনটি বেজে ওঠে। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা এসেছে। তিনি জানান, এরপর হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা চেক করতে গিয়ে বার্তা প্রেরণকারীর নাম দেখে বেশ অবাক হন। যিনি বার্তাটি পাঠিয়েছেন তিনি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর একজন সদস্য।

স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের ৭৫ বছরের ইতিহাসে তিন দশকেরও বেশি সময় সরাসরি দেশ শাসন করেছে সেনাবাহিনী। এমনকি যখন বেসামরিক সরকার দেশের শাসন ক্ষমতায় তখনও পর্দার আড়াল থেকে দেশের ক্ষমতা কেন্দ্রের বেশিরভাগই তারাই নিয়ন্ত্রণ করেছে।

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে করে পাক সেনাবাহিনীকে বেশ তৎপর বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এমনকি এও বলা হচ্ছে, পিটিআইকে হটিয়ে একটি সাজানো নির্বাচনের মধ্যদিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও তার দল পাকিস্তান মুসলিম লীগকে (পিএমএল-এন) ক্ষমতায় আনতে কাজ করছে সেনাবাহিনী।

পিটিআইকে নিয়ে খবর প্রচার না করার বিষয়টি তারই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় সেনা কর্মকর্তা আসলে কি বলেছিলেন, সে বিষয়ে ওই সাংবাদিক আল জাজিরাকে বলেন, ‘ওই কর্মকর্তা মূলত আমাদের কিছু নির্বাচনী কভারেজের কিছু প্রসঙ্গ তুলেছেন এবং বলেছেন যে, আমরা যেন অবশ্যই পিটিআই‘র পতাকা ব্যবহার না করি বা দলটির প্রার্থীদের সম্পর্কিত কোনো তথ্য উল্লেখ না করি।’

সাংবাদিক আরও বলেন, ‘আমাদেরকে স্পষ্টভাবে প্রার্থীদের শুধুমাত্র ‘স্বতন্ত্র’ হিসেবে চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং তারা কোন দলের সাথে সম্পর্কিত তা না প্রচার করতে বলেছেন।’

এমন আরও বেশ কয়েকজন সাংবাদিক যারা বিভিন্ন টিভি নিউজ চ্যানেল এবং ওয়েবসাইটভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের নিউজরুমে কর্মরত, একইভাবে তাদেরকে ফোন করে ও বার্তা পাঠিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে যে, কোনোভাবেই তারা যেন পিটিআই ও এর প্রার্থীদের খবর প্রচার না করে।

পাকিস্তানে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন (ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন সামনে করে এরই মধ্যে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারের পোস্টার দিয়ে রাস্তঘাট ও দেয়ালগুলো প্লাস্টার করে ফেলা হয়েছে।

কিন্তু অন্যান্য দল প্রচারণা শুরু করলেও পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল কারাবন্দি ইমরান খানের পিটিআই এখনও প্রচার শুরু করতে পারেনি। দলটির নির্বাচনী প্রতীক ‘ব্যাট’ কেড়ে নেয়া হয়েছে। কয়েক মাসব্যাপী অভূতপূর্ব দমন-পীড়নের পর ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পিটিআই’র দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।

গত ডিসেম্বরেই এই নিষেধাজ্ঞা দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। কমিশনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঘ্জ করে হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টে গিয়েও কোনো লাভ হয়নি। পিটিআই নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা বলছেন, পিটিআই’র পরাজয় নিশ্চিত করতেই প্রতীক হিসেবে ক্রিকেট ব্যাট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সামরিক-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি চক্রান্ত।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন