বিনোদন ডেস্ক :
দ্বাদশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডের সাফোকের উলপিট নামক একটি গ্রামে সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্যের। একটি ঘটনা অবাক করে দেয় গোটা ইংল্যান্ডকে।
সময়টা ছিল ধান চাষের সময়। কৃষকরা যখন মাঠে কাজ করছিলেন, তখন হঠাৎ লক্ষ্য করলেন জঙ্গলের পথ থেকে গ্রামের দিকে হেঁটে আসছে দুটি ছেলে-মেয়ে। তারা আর দশটা সাধারণ ছেলে মেয়ের মতো ছিল না। শিশু দুটির গায়ের রঙ ছিল সবুজ। এবং পড়নে ছিল উদ্ভট পোশাক। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে শিশু দুটি উদ্ভট ভাষায় কথা বলতে শুরু করে। শিশু দুটিকে সেখানকার স্থানীয় এক জমিদারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়ে গেলেও সেখানে থাকতে অস্বীকৃতি জানায় শিশু দুটি।
তারা কেবল মটরশুটি এবং কাঁচা শিম খেয়ে থাকত। তবে,পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ-খাওয়াতে না পেরে শিশু দুটি মানসিক বিষন্নতা থেকে বিভিন্ন অসুখে ভুগতে শুরু করে। ফলে ছেলেটি এক পর্যায়ে দ্রুতই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে।
অপরদিকে মেয়ে শিশুটি নতুন জীবনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করে। দীক্ষিত হয় খ্রিস্টধর্মে। মেয়েটিকে একটি পরিবার দত্তকও নেয়। তাকে ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে শেখানোর পর তাকে যখন তার অতীত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়, তখন খুব সামান্য কথাই জানা যায় মেয়েটির কাছ থেকে।
মেয়েটি সম্পর্কে ‘‘Rather loose and wanton in her conduct’’ নামক একটি বইয়েও উল্লেখ করা হয়। সেখান থেকে জানা যায়, শিশু দুটি সম্পর্কে ভাই বোন ছিল। দুজন এসেছিল সেন্টমার্টিন থেকে। সেখানকার এমন একটি গ্রামের কথা বলা হয় যেখানে সর্বদা চোখ ধাঁধানো আলো থাকে।
আর এর পাশে একটি নদী বয়ে চলেছে এবং সেখানকার সব অধিবাসীদের গায়ের রঙই সবুজ। তারা দুই ভাইবোন দিক হারিয়ে এসে পড়েছিল উলপিটের গ্রামে। কোন গ্রামে সবুজ রঙের অধিবাসীরা বাস করে তা খুঁজে বের করতে অনুসন্ধানও চালিয়েছিল গ্রামবাসী। কিন্তু সেখানে নদী ছাড়া কিছু মেলেনি।
মেয়েটি বড় হওয়ার পর নর্টফোক রাজ্যের কিংস লিনের এক যুবককে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে মেয়েটির নামকরণ হয় আগনেস বাড়ৈ। এই মানব শিশু দুটিকে নিয়ে অনেকে ভিন্ন মতামতও দিয়েছেন। অনেকের ধারণা শিশু দুটি অ্যানিমিয়া বা রক্তসল্পতায় ভুগছিল। সেই সময়টাতে এই অসুখটিকে বলা হত গ্রীন সিকনেস।
তাই হয়তো তাদের গায়ের রঙ সবুজ ছিল। ঐতিহাসিকদের মতে, শিশু দুটি ফ্লেমিশ পরিবারের শিশু যারা যুদ্ধের সময় সেন্টমার্টিনে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। র্দীঘদিন না খেয়ে থাকায় বাচ্চা দুটির শরীরে ক্লোরোসিস তৈরি হয় বলে তাদের গায়ের রঙ সবুজ বর্ণ ধারণ করে।