জাতীয় ডেস্ক:
অনলাইনে ফাঁদে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রসহ তিন দেশের কিশোরীদের নগ্ন ছবি সংগ্রহের অভিযোগে মো. সামির (২০) হোসেন নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা।
আদালতের নির্দেশে শনিবার (২৬ আগস্ট) তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. সাইফুল ইসলাম সময় সংবাদকে এ কথা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত সামির রাজশাহীর একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সে খুলনা শহরের সোনাডাঙ্গা থানার নিউমার্কেট এলাকার ছেলে। সম্প্রতি তিনি অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
সিটিটিসি কর্মকর্তারা জানান, ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের করা একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) তদন্ত করে গত সোমবার (২১ আগস্ট) সামিরকে তার বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতের অনুমতিতে তাকে দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীর মায়ের আবেদনের গুলশান থানায় গত ২৬ জুলাই ওই জিডি করেছিলেন ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা মাইকেল লি। অভিযোগে বলা হয়, ডিসকর্ড অ্যাপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ওই কিশোরীর সঙ্গে বাংলাদেশি নাগরিক সামিরের যোগাযোগ ও সম্পর্ক হয়। পরে তিনি ওই অ্যাপ এবং তার ই–মেইলে কিশোরীর তোলা পর্নো ছবি নিয়ে নেন।
এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে সামির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পায় পুলিশ। এরপর গত সোমবার (২১ আগস্ট) মার্কিন দূতাবাসের লি বাদী হয়ে মো. সামিরকে আসামি করে গুলশান থানায় ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। এরপর সামিরের অবস্থান শনাক্ত করে খুলনার সোনাডাঙ্গার বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্ত–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সামির নামের ওই তরুণ অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপ ডিসকর্ডে কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর ফাঁদে ফেলে তার নগ্ন ছবি সংগ্রহ করেছেন। তার মুঠোফোনে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার অন্তত ৩০ কিশোরীর পর্নো ছবি পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে মো. সাইফুল ইসলাম সময় সংবাদকে আরও জানান, এসব ছবি সামির কোনো সাইটে বিক্রি কিংবা কিশোরীদের ব্ল্যাকমেইলিংয়ে ব্যবহার করতেন না। শুধুমাত্র সংগ্রহ করতেন। তবে খুলনায় বসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা পৃথিবীর যে কোনো দেশের মানুষের সঙ্গে অপরাধে জড়ালেও পার পাওয়ার সুযোগ নেই।