অনলাইন ডেস্ক:
অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র, গণহত্যার বিচার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দেশে একটি অনিশ্চিয়তা ও অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে। সংকট উত্তোরণে ফ্যাসীবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলের ঐক্য জরুরি।’
শনিবার (২৪ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, দেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দায়বদ্ধতা রয়েছে। গণহত্যার বিচার ও মৌলিক সংস্কার করতে হবে। আমরা মনে করি শুধু ভোটের জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থান হয়নি।
যাদের যে দায়িত্ব তারা যেন সেটা পালন করেন মন্তব্য করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, সেনবাহিনী সম্প্রতি ৬২৬ জনের যে তালিকা প্রকাশ করেছে তা আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল। তা হলে এতো কথা হতো না। সেনাবাহিনী হলো স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনেক কর্মকর্তা অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদেরসহ গুম-খুনে জড়িতদের বিচার করতে হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী আমলের সব নির্বাচন অবৈধ। তাই সেসব নির্বাচনের প্রতিনিধি হতে যারা আন্দোলন করেন, তাদের বিষয়টি জনগণ ইতিবাচক হিসেবে নেয়নি। তৃণমূল মানুষের সেবা নিশ্চিতে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া দরকার। নির্বাচন কমিশনকে আস্থার জায়গায় ফিরতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সরকারে থাকা দুই ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে এনসিপির কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। তারা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে আহত ও শহীদ পরিবারের স্বার্থ আদায়ে তখন সরকারে যোগ দেন। এখন তাদের এনসিপির প্রতিনিধি বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য, তারা রাজনীতি করতে চাইলে আগে পদত্যাগ করতে হবে। যেমনটি আমি করেছি।
নাহিদ বলেন, বারবার দেশকে অনৈক্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। ৫ আগস্টের পর থেকেই তারা এ কাজটি করে আসছে। মূলত আওয়ামী লীগ তাদের দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি সব সময় ঐক্যের কথা বলেছে। বিএনপি সব সময় নির্বাচনের কথা বলেছে। কিন্তু নির্বাচনই মূল কথা নয়। আমাদের কাছে দেশের স্বার্থ আগে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন মৌলিক সংস্কার ও বিচার করে নির্বাচন দেবেন। কিন্তু যমুনাসহ বিভিন্ন আন্দোলন নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ থেকে পদে না থাকার কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এ পরিস্থিতি চলমান থাকলে এবং একটি নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন না হলে এর দায়ভার নিতে চান না।
এনসিপিরি এই নেতা বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক বিষয়ে কথা না বলার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন– এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।