খেলার সংলাপ:
বাংলাদেশের ফুটবলে নানা অনিয়মের খবর নতুন কিছু নয়। এবার আরেকটি লজ্জার মুখে পড়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। আর্থিক অসঙ্গতি বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে নিষিদ্ধ করেছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।
গতকাল শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) এক বিবৃতির মাধ্যমে আবু নাঈমকে নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়েছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। পাশাপাশি করা হয়েছে প্রায় ১২ লাখ টাকা (১০ হাজার সুইস ফ্র্যাঁ) জরিমানা।
ফিফার বিবৃতিরে পর উত্তল ফুটবল পাড়া। আজ শনিবার (১৫ এপ্রিল) বাফুফেতে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের জন্য অপেক্ষায় থাকেন সাংবাদিকরা। নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে শেষ পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে হাজির হলেও সব প্রশ্নের জবাব না দিয়েই স্থান ত্যাগ করেন তিনি।
সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে ফিফা নিষিদ্ধ করার ঘটনাটি দেশের ফুটবলের জন্য লজ্জাজনক কি না? এমন প্রশ্ন শুনতেই এড়িয়ে গেলেন সালাউদ্দিন। এরপর দেরি না করে ত্যাগ করেন সংবাদ সম্মেলন কক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই শুরুতেই সালাউদ্দিন বলেন, ‘একটা দুঃসংবাদের জন্য কারণে আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সেক্রেটারি নিষিদ্ধ হয়েছেন। আপনারা যেমন খবরটি গতকাল পেয়েছেন, একই সময়ে আমিও জেনেছি। গতকাল কিছু ডকুমেন্ট পড়েছি, এখনও পুরো শেষ করতে পারিনি। যেহেতু সাসপেন্ড করেছে, এই ব্যাপারে যা করা দরকার আমরা করেছি।’
সভাপতি জানান, এ বিষয়য়ে দ্রুতই সভা করবেন তারা। তাঁর কথায়, ‘আমি জরুরি সভা করতে চেয়েছিলাম। সিনিয়র সহ-সভাপতিসহ তিনজন দেশের বাইরে (কাজী নাবিল আহমেদ শুধু দেশের বাইরে আছেন, বাকিরা ঢাকার বাইরে) থাকায় করতে পারিনি। কালকে বোধহয় পৌঁছাবে। পরশু সভা করে তারপর সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
এরপরই সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে সংবাদ সম্মেলন কক্ষ ত্যাগ করেন সালাউদ্দিন।
এদিকে জানা গেছে, বাফুফেকে দেওয়া ফিফার অনুদানের অর্থ সঠিকভাবে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন সোহাগ। পরে কেনাকাটায় অনিয়ম ও গরমিল পাওয়ায় তাকেসহ বাফুফের আরও দুই কর্মকর্তাকে শোকজ করে ফিফা।
ফিফার ক্রয়নীতি অনুসারে, কোনো কিছু কিনতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশকে অন্তত তিনটি দরপত্র প্রকাশ করতে হবে। বাফুফে সেই কাজটি করলেও পরবর্তীতে এসব খাতসহ একাধিক বিভাগে গোঁজামিল পেয়েছে ফিফা। এর প্রেক্ষিতে সোহাগের বিরুদ্ধে অনুদানের অর্থ নিয়ে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য পরিবেশনের অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। গতকাল তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ফিফার স্বাধীন নৈতিকতা কমিটির নীতিনির্ধারক চেম্বার তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ফিফার নৈতিকতা আইন, ২০২০-এর ধারা ১৩ (সাধারণ দায়িত্ব), ১৫ (বিশ্বস্ততার দায়িত্ব) ও ২৪ (জালিয়াতি ও মিথ্যা প্রকাশ) লঙ্ঘন করেছেন। ফলে তাকে দুই বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফিফা।