রাজনীতি ডেস্ক :
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জিইয়ে রেখে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করছে ক্ষমতাসীনরা।
মির্জা ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে বর্তমান সরকার। ১২ লাখ পার হয়ে তা আরও বাড়ছে। প্রাকৃতিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। প্রতিনিয়ত হত্যা, মাদক বেচাকেনাসহ নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। তাদের এই বোঝা বহন অসম্ভব হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের জন্য।
রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশ একার নয়, বৈশ্বিক সংকট। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার বিশ্ব দরবারে তা নিয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। যা এ সরকারের চরম কূটনৈতিক ব্যর্থতা। যথাযথভাবে উপস্থাপনে ব্যর্থ হওয়ায় রোহিঙ্গা সমস্যা গুরুত্ব হারিয়েছে বিশ্বে। আর এজন্য সরকার দায়ী। এমন অবস্থায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন কঠিন হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরও বেশি প্রয়োজন। বাংলাদেশকে রাজনৈতিকভাবে আরও কার্যকর হতে হবে। মিয়ানমারসহ আন্তর্জাতিক দরবারে চাপ বাড়াতে হবে বাংলাদেশ সরকারকে।
তিনি আরও বলেন, ১২ লাখ রোহিঙ্গা তাদের মাতৃভূমি রাখাইনে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গা শরণার্থীকেও সরকার রাখাইনে ফেরত পাঠাতে পারেনি। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকারের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছাও তারা প্রমাণ করতে পারেনি। দীর্ঘদিনের এই সমস্যাকে কার্যকরভাবে আন্তর্জাতিকীকরণ করতে না পারা নিঃসন্দেহে সরকারের চরম ব্যর্থতা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই উপায়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে চান। সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার কক্সবাজার ক্যাম্প পরিদর্শনে গেলে তাকেও তারা একই দাবি জানায়। রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধানের জন্য ‘নিরাপদ রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন’ নিশ্চিত করতে হবে। আর এ প্রত্যাবর্তনকে শুধুমাত্র কাগুজে চুক্তিতে বন্দি না রেখে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় চুক্তির কার্যকর প্রয়োগের পথে এগোতে হবে। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘ, আঞ্চলিক সংস্থা এবং বিশ্বশক্তিগুলোর স্ব স্ব ভূমিকা সুনিশ্চিত করতে হবে। কার্যকর কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলকে বাংলাদেশের সীমাবদ্ধতার কথা উপলব্ধি করাতে হবে। কিন্তু তার আগে মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া হতে হবে স্বেচ্ছায়, মিয়ানমারের নাগরিকত্ব নিয়ে নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই। কোনো ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের পাতানো খেলার অপকৌশল হিসেবে নয়। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হতে হবে।