জাতীয় ডেস্ক:
রেলওয়েতে চাকরি দেয়ার নাম করে রাজশাহীতে একটি চক্র তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে। রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যোগসাজশে মেজর পরিচয় দিয়ে টাকাগুলো চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে তৌহিদুল ইসলাম শুভ নামের এক প্রতারক।
সম্প্রতি রাজশাহীর নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হলে তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
মুঠোফোনের ভিডিওতে তৌহিদুল ইসলাম শুভ নামে এক ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে টাকা গুনতে। সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দিলেও তিনি একজন প্রতারক। রেলওয়েতে চাকরি দেয়ার নামে প্রায় ২০ জনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ৩ কোটি টাকা।
ভুক্তভোগী আসাদ, নাজমুল ও পাভেলের অভিযোগ, ঢাকায় রেল ভবনে কর্মরত অর্থ বিভাগের যুগ্ম মহাপরিচালক নজরুল ইসলাম অনলাইনে একটি ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন। সে অনুযায়ী রাজশাহী থেকে আবেদন করেন চাকরি প্রত্যাশীরা। এসব চাকরি প্রত্যাশীদের ঢাকায় নিজ দপ্তরে লোক দেখানো লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেন নজরুল। চাকরি পেতে ভুয়া মেজর তৌহিদুল ইসলাম শুভ ও তার স্ত্রী ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেয়া মুক্তা পারভীনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কৌশলে তারা চাকরি দেয়ার নামে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে তাদের ভুয়া নিয়োগ পত্র দিয়ে বিভিন্ন জেলায় পোস্টিং দেয়া হয়। তিন মাস চাকরি করার পরও কোনো বেতন না পাওয়ায় সন্দেহ হয় ভুক্তভোগীদের। এরপর খোঁজখবর নিলে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা বুঝতে পারেন তারা। অনেকে জমি বিক্রি করে চাকরির পাবার আশায় টাকা দেন শুভর হাতে।
এরপর থেকে ভুয়া মেজর শুভর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারলেও রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম চাকরিপ্রার্থীদের মাথাপিছু এক লাখ টাকা করে দেয়ায় আশ্বাস দেন। যার একটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড এসেছে সময় সংবাদের হাতে। অথচ তাদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ১৫ থেকে ২২ লাখ টাকা। এ ঘটনায় রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানায় পাঁচজনকে আসামি করে তিনটি মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগীরা।
এদিকে মামলা দায়েরের পর শুভর স্ত্রী মুক্তা, শাহীনসহ এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিদের গ্রেফতার করে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হেমায়েতুল ইসলাম।
এ বিষয়ে জানতে রেলওয়ের অর্থ বিভাগের যুগ্ম মহাপরিচালক নজরুল ইসলাম ও ভুয়া মেজর পরিচয় দেয়া শুভর মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। প্রতারক শুভ সেলিব্রিটিদের সঙ্গে ছবি তুলে তা প্রতারণার কাজে ব্যবহার করেন।