জাতীয় ডেস্ক:
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে বেড়েছে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। এ ধারাবাহিকতায় সোমবার (১২ জুন) রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে।
সকাল থেকেই ঢাকার আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার পর শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। মাঝে মাঝে বজ্রপাতও হয়। বৃষ্টিতে পুরো ঢাকা শীতল হয়। স্বস্তি আসে নাগরিক জীবনে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীতে ৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ বৃষ্টিপাত চলবে আরও কয়েকদিন।
তবে সকালের বৃষ্টির স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। আধাঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মতো বৃষ্টিতেই হাঁটুজলে ডুবে যায় সড়ক থেকে গলির পথ। বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। এতে বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে।
বৃষ্টির কারণে রাজধানীর মিরপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আনসারক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। তৈরি হয় তীব্র যানজট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
এছাড়া পুরান ঢাকা, বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড, ধানমন্ডি, আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেট যেতে নতুন রাস্তায়, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা, মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায়, গুলশান লেকপাড় এলাকার সংযোগ সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ও অলগলিতেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
বাংলামোটরে অফিস করতে আসা এক চাকরিজীবী বলেন, কিছু বুঝে উঠার আগেই সকালে শুরু হয় বৃষ্টি। মুষলধারে বৃষ্টির কারণে ছাতা থাকার পরও ভিজে গেছি। তবে গরম থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে এ বৃষ্টি।
এদিকে জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগ পোহানো এক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, মিরপুর থেকে বাংলামোটর আসতে যে পরমিাণ সময় লেগেছে, তা বলার মতো না। বর্ষার আগেই এ অবস্থা হলে সামনের দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার শঙ্কা জানান তিনি।
পথচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জলাবদ্ধতার কারণে নোংরা পানিতে শরীর ও কাপড় ভিজে গেছে। এছাড়া নোংরা পানিতে ভিজে অফিসে গিয়েও চরম অস্বস্তিতে থাকতে হয়।
মিরপুরের কয়েকজন পথচারী জানান, গলির ভেতরে পানি জমে যাওয়ায় কয়েক কদম পথ পার করতেই রিকশাচালকরা ১০-২০, যার থেকে যত পারছে নিচ্ছে। এসব ভোগান্তিতে গন্তব্যে যাওয়া হয়ে উঠেছে কঠিন।
তবে সাধারণ মানুষের দাবি বর্ষার আগেই ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি করা। তা না হলে বর্ষাকালের বৃষ্টিতে রাজধানীবাসীকে আরও বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
এদিকে, রাজধানী ছাড়াও নাটোর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জসহ দেশের বেশ কয়েক জেলায় সকাল থেকেই ভারি বর্ষণের খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করেছে। এ বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
এর প্রভাবে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
রাজশাহী ও পাবনা জেলা ছাড়াও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং এ সময়ে তা প্রশমিত হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সীতাকুণ্ডে।