হোম এক্সক্লুসিভ যাত্রাবাড়ীতে বাড়ি বাড়ি এডিসের প্রজননক্ষেত্র!

জাতীয় ডেস্ক:

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একের পর এক মৃত্যুতে টনক নড়ল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি)। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়েছে সংস্থাটি। যেখানে বাড়ি বাড়ি ধরা পড়েছে এডিসের উর্বর প্রজননক্ষেত্র। ডিএসসিসি বলছে, সচেতন না হলে আরও কঠোর হবে নগর কর্তৃপক্ষ।

দীর্ঘদিন পর রোববার (১৮ জুন) দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে অভিযানে নামে একটিমাত্র টিম। এতেই এডিসবিরোধী অভিযানে যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকায় চোখে পড়ে অনিয়ম ও অসচেতনতার দৃশ্য।

একটি দোতলা বাড়িতে দেখা যায়, নিচতলায় টিউবওয়েল ও তার নিচে পানির রিজার্ভার। তার ওপরে সামান্য একটু জমে থাকা পানি। পরিমাণে খুব বেশি না হলেও স্বল্প এই পানিতেই শত শত এডিসের লার্ভা।

বাড়ির মালিককে এক হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে ক্যামেরার সামনে যেন একদমই অবুঝ শিশু বাড়ির বাসিন্দারা। বাড়ির মালিক বলেন, ‘এক হাজার টাকা জরিমানা চাইল। আর দিতে হলো। কী কারণে জরিমানা করল, সেটা তো জানি না!’

এর পরের গন্তব্য যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগের ১৩ তলা নির্মাণাধীন একটি ভবন। বাইরে থেকে যতটা অভিজাত ভেতরটা ঠিক যেন তার উল্টো। বাড়ির বেজমেন্টে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল পানি। অন্ধকার সেই কক্ষে লাইটের আলো পড়তেই নড়েচড়ে ওঠে হাজার হাজার লার্ভা। এ যেন এডিসের চারণভূমি। অভিযানে বাড়ির মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি বলেন, ‘কাজ চলছে বিধায় একটু পানি জমেছে। এ জন্য এমনটা হয়েছে।’

বাড়ির মালিককে জরিমানা করলেও অভিযানে সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, নামমাত্র অর্থদণ্ডে পরিবর্তন হবে না অসচেতন নাগরিকদের মানসিকতার।

গোলাপবাগ ও ধলপুরের বাসিন্দারা বলছেন, এলাকাটির ঘরে ঘরে এখন ডেঙ্গু রোগী। এরই মধ্যে মারা গেছেন কয়েকজন। তাদের অভিযোগ, দিনের পর দিন এমন সংকটাপন্ন পরিস্থিতি চললেও কঠোর কোনো অবস্থানে যায়নি সিটি করপোরেশন।

তারা বলেন, ঘরে ঘরে ডেঙ্গু রোগী রয়েছেন। ৫-১০ হাজার টাকা জরিমানা করলেও এসব বিষয়ে গুরুত্ব দেন না বাড়িওয়ালারা। প্রতিটি ভবনের নিচে গেলে দেখা যায় কী পরিমাণ নোংরা অবস্থা। এতে মশার উপদ্রব বাড়ছে।

প্রাথমিকভাবে অভিযানে অর্থদণ্ডের চেয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপরই বেশি জোর দেয়া হচ্ছে, এমনটাই বলছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে ভবিষ্যতে আরও কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারি তাদের।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেখা গেল যে বাড়িতে তাদের অবহেলার কারণে পাম্পের জায়গায় কিছুটা পানি থেকে যায় বা নির্মাণাধীন ভবনে পানি জমে থাকে। সেখানে লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। তাই আজ আমরা সচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন