যশোর অফিস:
যশোরে কৃষি প্রযুক্তি মেলায় পেঁয়াজ সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আধুনিক এই পদ্ধতিতে এক হাজা স্কায়ার ফিট জায়গায় এক হাজার মন পিয়াজ সংরক্ষণ করা যাবে। নতুন এই মেশিনটির দাম পড়বে ১৫ হাজার টাকা। যে কোন কৃষক তার বাড়িতে এই মেশিনের সাহায্যে পিয়াজ সংরক্ষণ করতে পারবে। এজন্য আর কোন কৃষককে হিমাগারে যেতে হবে না।মেলায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আশা এ পদ্ধতি প্রদর্শনী করে। বুধবার কৃষি প্রযুক্ত প্রদর্শনী মেলা সমাপনী অনুষ্ঠানে এ পদ্ধতিতের জন্য পুরস্কৃত করা হয়।
আশার এসআরএম (কৃষি) সাইফুদ্দিন বলেন, দেশে প্রতি বছর চাহিদার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদিত হলেও আধুনিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে না ওঠেনি। ফলে, প্রতি বছর উৎপাদিত পেঁয়াজের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পরে নষ্টের সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ আমদানি করে দেশের পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ করতে হচ্ছে। দেশের কৃষি ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তিগত উন্নয়ন হলেও পেঁয়াজ সংরক্ষণে কৃষকরা এখনো প্রাচীন পদ্ধতিতে বাঁশের মাচায় পেঁয়াজ সংরক্ষণ করছেন। প্রাচীন এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা গেলেও বড় একটি অংশ প্রতি বছর পচে নষ্ট হয়ে যায়। তবে, দেশে প্রথমবারের মতো পেঁয়াজ সংরক্ষণে প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক সংরক্ষণাগার গড়ে তোলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্টের (আশা) উদ্যোগে আধুনিক এয়ার-ফ্লো মেশিন সংযুক্ত বিশেষ এ সংরক্ষণাগার গড়ে তোলা হয়েছে। আশার কৃষি কর্মসূচির আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে আধুনিক পদ্ধতিতে স্বল্প খরচে পেঁয়াজ সংরক্ষণে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আশার টেকনিক্যাল অফিসার (কৃষি) নীতিকেশ মন্ডল বলেন, পেঁয়াজ চাষিরা দীর্ঘদিন ধরে টিনের ঘর বা সেমিপাকা ঘরে উঁচু বাঁশের মাচা তৈরি করে সনাতন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে থাকে। এতে একদিকে পেঁয়াজে ব্যাপক পচন ধরে, অন্যদিকে শুকিয়ে ওজন কমে যায়। এছাড়া বাঁশের মাচা তৈরি করতে অনেক খরচ হয়। ফলে, কৃষকের অনেক সময় লোকসান গুণতে হয়। এসব বিবেচনা করে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎচালিত এয়ার-ফ্লো মেশিনের মাধ্যমে পেঁয়াজ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ হল রুমে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান আলী। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তারসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তারা।