হোম খুলনাযশোর যশোরের ভবদহের অঞ্চলের ১৮১ কৃষকের নামে সার্টিফিকেট মামলা

যশোরের ভবদহের অঞ্চলের ১৮১ কৃষকের নামে সার্টিফিকেট মামলা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 44 ভিউজ

মনিরামপুর প্রতিনিধি:

দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার মধ্যেই অতিবৃষ্টি-যশোরের মনিরামপুর উপজেলাসহ ভবদহ পাড়ের মানুষের কপালে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে এনেছে। কাজকর্ম হারিয়ে সবাই দিশেহারা। এরমধ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে পারেননি অনেক দরিদ্র কৃষক। তাদের মধ্যে মনিরামপুর উপজেলার ১৮১ জনের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অনেকের বিরুদ্ধে প্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে। যে কারণে ভয়ে অনেকে আত্মগোপনে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এসব পরিবারের সদস্যরা পড়েছেন আরও দুর্দিনে। স্থানীয় প্রশাসন এটাকে রুটিন ওয়ার্ক বলে দুশ্চিন্তা না করা আশ্বাস দিলেও স্বস্তি ফিরছে না ক্ষত্রিগ্রস্ত মানুষের মাঝে। ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। সম্প্রতি ভবদহের জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শনে আসেন পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্ঠা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি ভুক্তভোগী মানুষের সাথেও কথা বলেন। সেসময় এলাকার মানুষ তাকে জানিয়েছিলেন জলাবদ্ধতার কারণে তারা কোনো কাজকর্ম করতে পারছেন না। যে কারণে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। অধিকাংশ মানুষই দু’বেলা দুমুঠো ঠিকমতো খেতেও পারেন না। এই পরিস্থিতিতে এনজিও থেকে ঋণের কিস্তি আদায় নিয়ে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ স্বাভাবিক রোজগারের জায়গায় না যাওয়া পর্যন্ত এনজিওদের ঋণের কিস্তি না আদায়ের জন্যে সরকারের কাছে দাবি জানান তারা। ওই সফরে পরিবেশ উপদেষ্ঠা স্থানীয়দেরকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে তিনি সরকারের সাথে আলোচনা করে বিষয়টির একটা সুরাহা করবেন। এরপর কয়েকদিনের মধ্যে এনজিও রেগুলেটরি অথরিটির পক্ষ থেকে এনজিওদেরকে ভবদহ এলাকায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনা এখনো বহাল রয়েছে। তবে, এরই মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা আদায় করতে না পেরে দরিদ্র ও অসহায় ১৮১ জন কৃষকের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় অনেক কৃষকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে। যার কারণে পরোয়ানাভুক্ত অনেকে ভয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মামলার শিকার ছাড়াও সাধারণ কৃষকদের মধ্যে চরম অস্বস্তি বিরাজ করছে। ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্ঠা ইকবাল কবির জাহিদ এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, সংগ্রাম কমিটির সুস্পষ্ট দাবি, ভবদহের জলাবদ্ধ এলাকার কৃষকদের নেয়া দশ হাজার টাকার কৃষি ঋণ মওকুফ করতে হবে এবং কৃষি ঋণের সুদ মওকুফ করতে হবে। অনাদায়ী ঋণের ব্যাপারে কোনো মামলা করা যাবে না। তারপরও যদি মামলা হয়ে থাকে তাহলে তা দুঃখজনক। অবিলম্বে এসব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান ইকবাল কবির জাহিদ। মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না বলেছেন, কৃষকরা ব্যাংক ঋণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পরিশোধ না করায় তাদের নামে সার্টিফিকেট মামলা হয়। তবে তারা তাদের সমস্যার বিষয় নিয়ে আবেদন করলে বিষয়টি দেখা হবে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘ভীত হওয়ার কিছু নেই। এটা নিয়মতান্ত্রিক ব্যাপার।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন