হোম খুলনাবাগেরহাট মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের ৮ টি গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার পদ শুন্য বছরের পর বছর ধরে!

মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের ৮ টি গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার পদ শুন্য বছরের পর বছর ধরে!

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 27 ভিউজ
জসিম উদ্দিন:
বছরের পর বছর ধরে শূণ্য রয়েছে মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের কর্মকর্তার ৮টি গুরুত্বপূর্ণ পদ। জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের জারিকৃত সর্বশেষ পরিপত্র মেনে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ৪র্থ,৫ম ও ৬ষ্ট গ্রেটের পদোন্নতি বোড বসাতে পারিনি মোংলা বন্দর কতৃপক্ষ। এর  ফলে এমন শূণ্যতার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে নিয়মানুসারে নিদিষ্ট সময় দায়িত্বপালন শেষে যোগ্যতা অর্জনের পরও একই পদে দির্ঘ দিন দায়িত্বপালন করতে হচ্ছে অনেক কর্মকর্তাদে। এছাড়া বন্দরের  ১৩টি অতি গুরুত্বপূর্ণ পদে ডেপুটেশনে এসে দায়িত্ব পালন করছেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা।  এমন পরিস্থীতিতে টেকসই বন্দর ব্যবস্থাপনা ও বন্দরের দাপ্তরিক কাজের গতি বাড়াতে ডেপুটেশনের পরিবর্তে যোগ্য ও অভিঞ্জদের দায়িত্ব প্রদান এবং সকল শুণ্য পদে পদায়নের দাবি ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের।
মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের প্রবিধানমালা অনুযায়ী দেখাযায়,বন্দরে কর্মরত কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগ্যব্যাক্তি না থাকলে ডেপুটেশনে দায়িত্ব পালন করা যাবে। সে অনুযায়ী বর্তমানে মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের ”চেয়ারম্যান, সদস্য(হারবার ও মেরিন), সদস্য (অর্থ),সদস্য(প্রকৌশল ও উন্নোয়ন),পরিচালক (প্রশাসন), হারবার মাস্টার, প্রধান প্রকৌশলী(যান্ত্রিক ও তড়িৎ),প্রধান প্রকৌশলী( মেরিন),প্রধান নিরাপর্ত্তা কর্মকর্তা, প্রধান হাইড্রোগ্রাফার,পরিচালক ট্রাফিক,পরিচালক(বোর্ড) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট”এ ১৩ টি অতিগুরুত্বপূর্ণ পদে ডেপুটেশনে দায়িত্ব পালন করছেন, বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী এবং সচিবালয়ের কর্মকর্তাগন।
এমন পরিস্থিতিতে বন্দরের গুরুত্বপূর্ন দপ্তর ”উপপ্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক ও তড়িৎ), ডেপুটি ট্রাফিক ম্যানেজার, পরিচালক (বোর্ড), নির্বাহী প্রকৌশলী (মেরিন),নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল ও হাইড্রলিক্স), ডেপুটি ম্যানেজার,উর্ধতন হিসাব কর্মকর্তা , ডেপুটি হারবার মাস্টার এ ৮ টি পদ শুন্য রয়েছে বছরের পর বছর ধরে।
নাম প্রকাশ না করা সত্বে মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের এক কর্মকর্তা জানান, মোংলা বন্দর সৃষ্টির পর থেকে কর্মকর্তাদের পদের পদোন্নতি করা হতো পদোন্নতি সভায়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তরের দায়িত্বহিনতায় বেশ কয়েক বছর ধরে ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ট গ্রেটের পদোন্নতি ফাইল উর্থাপন করা হয়নি।
মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের ডেপুৃটি ট্রাফিক ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মোঃ সোহাগ বলেন, গেল সরকারের আমলে বন্দরের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তার ও সুবিধা নেওয়ার জন্য ২০২৪ সালে ৪র্থ,৫ম ও ৬ষ্ট গ্রেটের পদোন্নতি বা পদায়নের বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়। এর পর থেকে জটিলতা আরো বেশি ধারণ করেছে।দির্ঘ দিন একই পদে আছি। বিনা সুবিধায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি উচ্চ পদে। কিন্তু পদোন্নতি হচ্ছেনা। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
কেন পদায়ন বা পদোন্নতির ফাইল উর্থাপন করা হচ্ছেনা না? এমন প্রশ্ন করা হলে এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি নয় বলে জানান, মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের সহকারী ব্যবস্থাপক(কর্ম) মোঃ শাহীনুর ইসলাম।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক সামিউল হক বলেন, মোংলা বন্দরের উন্নোয়নের সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। যেমন ডেপুটেশন এর পরিবর্তে অভিজ্ঞদের দায়িত্ব প্রদান ও পদোন্নতি বা পদায়নে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। আর মন্ত্রনালয় গুলোর সমন্বয়হীনতার কারনে  জটিলতা সৃষ্টি হয়।এর ফলে বন্দরের দাপ্তরিক কাজ তরান্নিত হয়না। একই সাথে অনভিজ্ঞদের দায়িত্ব পালনের কারনে দির্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহনে সমস্য হয়। কারন, সামরিক বাহিনী বা প্রশাসনের কর্মকর্তাগন কয়েক বছর বা কয়েক মাস দায়িত্ব পালন করেন। এতে করে অভিজ্ঞতা অর্জনের আগেই তাদের বদলী হয়ে যায়।
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ও বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এম রফিকুল ইসলাম জানান, মোংলা বন্দরে দেশী বিদেশী নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। কর্মকর্তার অনেক পদ শুন্য রয়েছে। এতে করে ব্যবহারকারীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে শুন্য পদগুলোতে কর্মকর্তা পদায়ন করে সেবারমান বাড়ানো উচিত। তবেই মোংলা বন্দরের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকা আরো সচল হবে। তাই বন্দরের দাপ্তরিক কর্মকান্ডের গতি বাড়াতে ওই পরিপত্র থেকে বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাতিল ও দ্রুত সময়ে মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের দপ্তরের শূণ্য পদে যোগ্যদের পদোন্নতি এবং ডেপুটেশনের পরিবর্তে অভিঞ্জদের দিয়ে বন্দর পরিচালনার দাবী জানান তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন