বাণিজ্য ডেস্ক:
ব্রয়লার মুরগির বাজার ঠিক করতে অবশেষে বাচ্চার চাহিদা ও জোগানের হিসাব কষে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। সপ্তাহে কোন প্রতিষ্ঠান কতো মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করবে- তাও আগে থেকেই ঠিক করা হবে। তবে তা কাগজে-কলমে না, বাস্তবে দেখতে চায় প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন।
কেবল চাহিদার বিপরীতে জোগান স্বাভাবিক থাকলেই দীর্ঘ সময় ধরে বাজারে দামের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব; আর ভারসাম্যপূর্ণ বাজারেই সম্ভব পরিকল্পনামতো ব্যবসা পরিচালনা করা। অর্থনীতির এই সাধারণ তত্ত্বকেই এবার মুরগির বাজারে কাজে লাগাতে চায় প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। যেখানে প্রথম ধাপে ঠিক করা হবে প্রতি সপ্তাহে একদিন বয়সি বাচ্চার চাহিদার হিসাব।
প্রাথমিক এই প্রস্তাবনায় বলা হচ্ছে, বছরের জুন, জুলাইয়ে ৫ কোটি ২০ লাখ করে আর ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ ৬ কোটি করে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করবে ব্রিডার ফার্মগুলো।
এই পলিসিতে যাওয়ার পরেই সারা পৃথিবীতে প্রাণিসম্পদ খাত একটি স্থিতিশীল অবস্থানে আসছে বলে জানান ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান।
ব্যবসাবান্ধব সরকারের এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন প্রান্তিক খামারিরা। তারা বলছেন, চাহিদা ঠিক করা গেলে যেমন কাটবে বাজার অস্থিরতা তেমনি সঠিকমূল্যে মুরগি কেনার সুযোগ পাবেন ভোক্তারা।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, একটি মাত্রা যদি নির্ধারণ করা হয়, তাহলে বাজারে সঠিক মূল্য পাওয়া যাবে। ভোক্তারাও ন্যায্যমূল্য কিনতে পারবেন। তবে এটি শুধু কাগজে কলমে না রেখে এটিকে মাঠ পর্যায়ে কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে ক্ষেত্রে নজর দিতে হবে। কারণ আজ এই কার্যক্রম লিখিত আকারে নেয়া হলো, কিন্তু পরবর্তীতে তা বাস্তবায়ন হলো না। তাহলে এটির ফল পাওয়া যাবে না।
চাহিদা ও জোগানের হিসাব সঠিক হলে লাভ-ক্ষতির খাতায় লোকসানি হিসাব কমবে। এমন দাবি করে ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, তারাও চান বাজার চাহিদা মেনেই সরবরাহ নিশ্চিত করতে। এজন্য সক্ষমতার অনুপাতে উৎপাদন কমানো হবে আবার দরকার হলে একইভাবে বাড়ানো হবে যোগান।
ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, এখন পরিকল্পনা হচ্ছে, আমরা এই নীতি চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়নের দিকে এগোবো। আমরা এখন দেখেছি, আমাদের কাছে যদি সারা বছরের বিভিন্ন সময়ে প্রতি সপ্তাহে ১ কোটি ৩০ লাখ থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ পর্যন্ত মুরগির বাচ্চা থাকে, তাহলে দেশের অভন্ত্যরীণ বাজার স্থিতিশীল থাকবে। সারা দেশে আমাদের সক্ষমতা দুই কোটির ওপরে। তাই আমরা বলছি আমরা সবাই একটু কমিয়ে আনবো এবং এই কমিয়ে আনবো যার যার সক্ষমতা অনুসারে। যার সক্ষমতা বেশি সে বেশি কমাবে এবং যার কম সে কম কমাবে। অর্থাৎ, আনুপাতিক হারে এগুলো কমানো হবে। সবার জন্যই একই নীতি করা হবে।
এমন উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাচ্চার দাম নির্ধারণ যেন বিতর্কমুক্ত হয়, সেজন্য প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কাছে সেই দাবি করেছে ব্রয়লার মুরগির খামারিরা।