রাজনীতি ডেস্ক:
মুন্সীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। হামলার ঘটনার পর থেকে দুপক্ষই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তারা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী পালন করেন।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) শহরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায় মুন্সীগঞ্জ পৌর মেয়র হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব ও স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাসের সমর্থকেরা। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ৩৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি বলে শনিবার সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেছেন মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। কতিপয় লোক পুলিশ নজরদারিতে রয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের অনুষ্ঠান থেকে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাসকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন পৌর মেয়র পক্ষের সমর্থকেরা।
এদিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার পর শনিবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জ শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ, সুপারমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে গণসংযোগ করেন মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি। এসময় মেয়র ফয়সাল বিপ্লব বিরোধী নানারকম স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। গণসংযোগে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
অন্যদিকে একই দিন শনিবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর এলাকার গজারিয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ। এতে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব, গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ্সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে মুন্সীগঞ্জ শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকায় পৌরসভার মেয়র হাজী ফয়সাল বিপ্লবের কর্মী সমর্থদের উপর অপ্রীতিকর ঘটনার প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা হামলার জড়িত থাকা সন্ত্রাসীদের ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
পৌর মেয়র ফয়সাল বিপ্লব জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিনের ছেলে। অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস মুন্সীগঞ্জ-৩ (মুন্সীগঞ্জ সদর ও গজারিয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে গত দুবার নৌকার মনোনয়নে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মৃণাল কান্তি দাস। সম্প্রতি আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পৌর মেয়র ফয়সাল বিপ্লব। এ নিয়ে এ দুই উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছেন। এত দিন দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব চাপা থাকলেও নির্বাচন সামনে রেখে তা প্রকাশ্য হয়ে উঠেছে। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে সেই চিত্র ফুটে উঠে সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে।