বাণিজ্য ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক পাঁচটি ব্যাংকের ঋণমান এক ধাপ অবনমন করেছে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস। এর আগে মার্কিন ১০টি ব্যাংকের ঋণমান কমিয়েছেল মুডিস।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানায়, সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক পাঁচটি ব্যাংকের ঋণমান এক ধাপ অবনমন করেছে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ব্যাংককে ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় রাখা হয়েছে।
মূলত যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে ঋণ দেয়া-নেয়া ‘কঠিন’ হয়ে পড়েছে। এতে ক্রেডিট দুর্বলতা ও নিম্ন মুনাফার হার থেকে শুরু করে নানা ধরণের অর্থনৈতিক দুর্বলতার কারণে ব্যাংকগুলোর ঋণমান অবনমন করা হয়েছে।
ব্যাংকগুলো হলো কি করপোরেশন, কোমারিকা ইনকরপোরেশন, ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যানকর্প, ইউএমবি ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশন ও অ্যাসোসিয়েটেড ব্যাংক-কর্প।
এর আগে চলতি মাসের ৮ আগস্ট ক্রেডিট দুর্বলতা ও নিম্ন মুনাফার হার থেকে শুরু করে নানা ধরণের অর্থনৈতিক দুর্বলতার কথা উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের ১০ ব্যাংকের রেটিং কমিয়েছিল ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি মুডিস।
সে সময় বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, এক সিদ্ধান্তে ১০ ব্যাংকের রেটিং কমিয়েছে মুডিস। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় আছে যুক্তরাষ্ট্রের আরও ছয়টি ব্যাংক। আগামী কয়েক মাস এদের ক্রেডিট পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে মুডিস।
যেসব ব্যাংকের রেটিং কমানো হয়েছে সেগুলো আকারে ছোট কিংবা মধ্যম মানের। তবে ঝুঁকির তালিকায় আছে যুক্তরাষ্ট্রের বাঘা বাঘা ব্যাংকও। এর মধ্যে নিউইয়র্ক মেলন, ইউস ব্যানক্রপ এবং টুরিস্ট ফিনান্সিয়্যাল অন্যতম।
মুডিস এক বার্তায় জানিয়েছিল, বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ব্যাংকে দেখা দিয়েছে ক্রেডিট দুর্বলতা। এতে করে বাধ্য হয়ে ব্যাংকগুলোর রেটিং অর্থাৎ ঋণমান কমাতে হচ্ছে।
যদি ব্যাংকিং ব্যবস্থা এভাবে চলতে থাকে তাহলে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে মন্দার মুখে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র- এমনটাই শঙ্কা করছে মুডিস। মূলত সিআরই (কমার্সিয়াল রিয়েল এস্টেট) ক্রেডিটের পরিমাণ কমে যাওয়া ও উচ্চ সুদহার সামাল দিতে গিয়ে বেহাল দশা হচ্ছে ব্যাংকগুলোর।
এছাড়া ব্যাংকবহির্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের আরও ১১ প্রতিষ্ঠান ঝুঁকির মুখে আছে উল্লেখ করে মুডিস জানায়, ঋণদাতা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ওয়ান, সিটিজেন ফিন্যান্সিয়ালের মতো প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি দিনকে দিন বাড়ছে।
চলতি বছরের শুরুতে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক এবং সিগনেচার ব্যাংকের দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ঘটনার পর থেকে ঝুঁকির মুখে আছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং অর্থনীতি। মূলত মূল্যস্ফীতি কমাতে একদিকে সুদহার বাড়াচ্ছে ফেডারেল রিজার্ভ। এতে করে অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ চাহিদার পরিমাণ কমছে। মানুষের ঋণ নেয়া ও সঞ্চয়ের প্রবৃত্তিতেও এর প্রভাব পড়েছে। এতে করে ব্যাংকিং ব্যবস্থা দিনকে দিন আরও দুর্বল হচ্ছে বলে জানিয়েছে মুডিস।