বাণিজ্য ডেস্ক :
বাড়ির পরিত্যক্ত উঠোনে বিদেশি ৩০ প্রজাতির আম চাষাবাদ ও মিশ্র মাতৃ ফল বাগান করে চাষাবাদের নতুন দ্বার উন্মুক্ত করেছেন মৌলভীবাজার বড়লেখার যুবক মো. রেজাউল করিম খন্দকার।
টানা পাঁচ বছর বিদেশি প্রজাতির নানা ফল ও গাছ নিয়ে গবেষণার পর মো. রেজাউল করিম খন্দকার এখন বাণিজ্যিকভাবে বাগান গড়তে মাঠে কাজ করছেন। নিজ মাতৃগাছ থেকে গ্রাফর্টিং করে ফল বাগান গড়ে তুলছেন।
প্রতিটি গাছের বয়স তিন থেকে চার বছরের ওপরে। কোনোটা টবে, কোনোটা আবার রোপণ করা হয়েছে মাটিতে। সব কয়েকটি গাছই উচ্চতায় তেমন একটা ওপরে যায়নি। তবে আমের ভারে অধিকাংশ আম গাছগুলো একেবারে মাটিতে নুয়ে পড়ছে। এক একটি আমের ওজন এক থেকে তিন কেজি।
আমেরিকা, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, ব্রুনাই, আফ্রিকা, ভিয়েতনামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ত্রিশ প্রজাতির আমই রয়েছে এ মিশ্র মাতৃফল বাগানে। শুধু যে আম চাষেই সীমাবদ্ধ, তা কিন্তু নয়। তিনি আফ্রিকান হলুম মালটা, আপেল, নাশপাতি, ড্রাগন, আঙ্গুর, মরভূমির তিনফল, রামবুটানসহ অসংখ্য দুর্লভ প্রজাতির ফল চাষ করছেন।
২০১৭ সালে দু‘একটা গাছ দিয়ে গবেষণাধর্মী চাষাবাদ শুরু করলেও দীর্ঘ পাঁচ বছর পর তার বাগানজুড়ে ৮০ প্রজাতির ফলের গাছ রয়েছে। বাগানের প্রতিটি গাছই ফুল-ফলে ভরে উঠছে। গেল শীতে স্ট্রবেরি বিক্রি করে তিনি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করেছেন।
চাষের কলাকৌশল ও মাটি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করে পুরোদমে এখন বাণিজ্যিক চাষে মাঠে কাজ করছেন মো. রেজাউল করিম খন্দকার। ইতোমধ্যে ১৫ শতক জমিতে আম্রপালি আমের বাগান করেছেন। ২২টি গাছে ফলনও এসেছে ভালো। এ আম বিক্রি করে ৩৫ হাজার টাকা মুনাফা করার কথা জানান তিনি।
তার এ মিশ্র মাতৃ ফল বাগান দেখতে এবং পরামর্শ নিতে অনেকেই তার কাছে ভিড় করছেন। পাশাপাশি তিনি সাধ্যের মধ্যে সবাইকে সহায়তাও করছেন।
কৃষিতে বাণিজ্যিকরণে এ ধরনের তরুণ যুবককে সার্বিক সহায়তা ছাড়াও প্রযুক্তিগত সাহায্য করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী।
মিশ্র ফল বাগানে রেজাউল করিম খন্দকারকে সার্বিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বড়লেখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবল সরকার বলেন, সরিয়া গ্রামের রেজাউলে মতো এ উপজেলায় আরও ৭ জন চাষি এভাবে ফল বাগান গড়ে তুলেছেন। তাদের আধুনিক প্রযুক্তিগত ব্যবহার যেমন ফ্রুট ব্যাগিং ও জৈব বালাইনাশক পদ্ধতিসহ নানানভাবে সাহায্য দেয়া হচ্ছে।
এ উপজেলায় এখন উন্নত জাতের স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি মো. রেজাউল খন্দকারের প্রশংসা করেন।