জাতীয় ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন, আজ যারা স্বচ্ছ নির্বাচনের কথা বলছেন, তারাই দেশে অস্বচ্ছ নির্বাচনের প্রবর্তন করেছেন।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে সামরিক শাসনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের সুযোগ নেই। যেহেতু তারা করেছে, তাই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকে বৈধতা দিয়ে দল গঠনের মাধ্যমে দুই-তৃতীয়াংশ মেজরটি নিতে নির্বাচনের নামে ব্যালট বাক্স ছিনতাই, কেন্দ্র দখলসহ নির্বাচন পদ্ধতিকে বিধ্বস্ত করেছিল তারাই।’ তিনি বলেন, ২০০৬ সালে ১ কোটি ২০ লাখ ভুয়া ভোটার, ইয়াজ উদ্দিন আহমেদকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ও নিজেদের পছন্দের লোককে নির্বাচন কমিশনের প্রধান করতে গিয়ে জনবিস্ফোরণে পতন হয়েছিল বিএনপির।
আমির হোসেন আমু বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রধান করে নির্বাচন কমিশন গঠন হলেও দেখা যাবে, তা বিএনপির অন্য নেতাদের পছন্দ হবে না।
ভাষা আন্দোলনের পটভূমি তুলে ধরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন অবদানের কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগের প্রবীণ এই নেতা বলেন, ‘আমাদের এই ভাষা আন্দোলন ছিল জাতিসত্তার আন্দোলন। এটি বঙ্গবন্ধু ধারণ করেছিলেন। প্রতিটি ধাপে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যাদের নাম সংযুক্ত আছে ভাষা আন্দোলনে, যারা বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন, তারা কিন্তু সেটাকে ধারণ করতে পারেননি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেটা ধারণ করে ধাপে ধাপে জাতীয়তাবাদকে শানিত করে পরবর্তী সময়ে ছয় দফা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই দেশকে স্বাধীন করেছিলেন।’
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার, গণ আজাদী লীগের সভাপতি এস কে সিকদার, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য অধ্যাপক সুশান্ত কুমার দাস, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনসহ প্রমুখ।
মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালি জাতির প্রথম ভাষাসৈনিক। তার নেতৃত্বেই ভাষা আন্দোলনের সংগ্রাম শুরু হয়েছিল এবং তিনি প্রথম ভাষাসৈনিক হিসেবে গ্রেফতার হয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ছিল ভাষা আন্দোলনের জন্য অনন্য, অবিস্মরণীয় দিন। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে এদিন প্রথম হরতাল পালিত হয়। এটি ছিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম হরতাল। সেই হরতালে নেতৃত্ব দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন এবং গ্রেফতার হন। ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়ে এটিই ছিল কোনো রাজনৈতিক নেতা গ্রেফতারের প্রথম ঘটনা। এটি ছিল প্রথম কোনো ভাষাসৈনিকের গ্রেফতারের ঘটনা।
হানিফ বলেন, বায়ান্নর ভাষাশহীদদের পবিত্র রক্তের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের গৌরবগাথা। ছাত্রসমাজ মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠা করেছিল গৌরবময় এক আসনে। বিশ্বের প্রতিটি মাতৃভাষার মর্যাদা, স্বাধিকার, স্বাধীনতার অনুপ্রেরণা সৃষ্টির চির অনির্বাণ শিখার দিগন্ত উন্মোচন করেছে একুশে ফেব্রুয়ারি। এ দেশের মানুষকে শিখিয়েছে আত্মত্যাগের মন্ত্র। বাঙালিকে করেছে মহীয়ান।
এ সময় ১৪ দলের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, এখন পর্যন্ত এই বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ। সামনের কঠিন দিনের জন্য সব ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।