রাজনীতি ডেস্ক:
সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের বার্ষিক আয় কমলেও বেড়েছে অস্থাবর সম্পদ। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের নৌকার প্রার্থী। তার মনোনয়ন বৈধ হিসেবে গৃহীত হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালিগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের বর্তমান বার্ষিক আয় ৩২ লাখ ৬ হাজার ৪০৬ টাকা। গত ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় তার বার্ষিক আয় ছিল ৩৪ লাখ ৩৫ হাজার ৮৫৫ টাকা। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে তার বার্ষিক আয় কমেছে ২ লাখ ২৬ হাজার টাকা।
২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন নুরুজ্জামান আহমেদ। পরে ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় তার মোট বার্ষিক আয় ছিল ৩৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষিখাত থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার, বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে ৯২ হাজার, তামাকের ব্যবসা ও সঞ্চয়পত্র থেকে ৭ লাখ ৪৫ হাজার, চাকরির সম্মানি ভাতা বাবদ ১১ লাখ ৪ হাজার এবং মৎস্য খামারের ব্যবসা থেকে ১৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।
আর আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময়ে এসে মন্ত্রী তার হলফনামায় আয়ের উৎস হিসেবে দেখিয়েছেন কৃষি খাতে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৬০০ টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০০ টাকা, ব্যবসা ৬ লাখ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়/ব্যাংক আমানত ৮ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৬ টাকা ও সম্মানি ১৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
এছাড়া নিজস্ব সম্পদ হিসেবে দেখিয়েছেন নগদ ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার ২৫৪ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ১৪ লাখ ৪ হাজার ৯৯৭ টাকা, সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ২০ লাখ টাকা; বাস, ট্রাক, মোটর গাড়ি, লঞ্চ, স্টিমার, বিমান ও মোটরসাইকেল বাবদ ৩৪ লাখ ৬১ হাজার, স্বর্ণ, অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথর নির্মিত অলংকারাদি ৩২ হাজার, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ৬০ হাজার ও আসবাবপত্র ২৬ হাজার ৫০০ টাকা।
হলফনামা অনুযায়ী মন্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ গতবারের চেয়ে বেড়েছে। মন্ত্রী হওয়ার আগে তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার টাকা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ১ কোটি ৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। বর্তমানে তার নগদ অর্থ রয়েছে ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ২ কোটি ১৪ লাখ ৫ হাজার টাকা। এছাড়া সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানত ২০১৮ সালের হলফনামায় কোনো জমা না দেখালেও এবার তিনি সেখানে ২০ লাখ টাকা জমা দেখিয়েছেন। তার ডিউটি ফ্রি একটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ম-১৫-০৩৩১) দুটি হলফনামাতেই উল্লেখ করেছেন। আর স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রাজউকে ৩০ লাখ মূল্যের একটি প্লট, পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ২০ শতক ভিটেবাড়ি, দোকান, গোডাউন এবং ২৫ বিঘা কৃষিজমি ও ৩৫ বিঘা মৎস্য খামার দেখানো হয়েছে দুইবারের হলফনামাতেই।
উল্লেখ্য, মন্ত্রী তার গতবারের (২০১৮ সালের) হলফনামায় স্বর্ণালংকারের পরিমাণ উল্লেখ করেছিলেন ২৫ তোলা, সেখানে মূল্য উল্লেখ ছিল না। তবে এবারের হলফনামায় অলংকারের পরিমাণ উল্লেখ না করে শুধু মূল্য উল্লেখ করেছেন ৩২ হাজার টাকা।