মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
যশোরের মনিরামপুরে ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধার তথ্যপ্রমান যাচাই-বাছাই শেষে উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে ১৬ জনকে বৈধ হিসেবে গন্য করেছেন। ৫ জনের প্রমানপত্র না মঞ্জুর করা হয়েছে। ১ জনের ব্যাপারে কমিটি দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ৩ জনকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। উপজেলা কমিটি ইতিমধ্যে চুড়ান্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিয়েছেন।উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রোকনুজ্জামান জানান, মনিরামপুর উপজেলায় মোট ২৯০ জন ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। এর মধ্যে বৈধ প্রমানপত্রে ত্রুটির জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় ২৫ জনের একটি তালিকা করেন।
সেই তালিকা যাচাই-বাছাই করতে সরকার চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। কমিটির সভাপতি নিযুক্ত হন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের(জামুকা) চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত মুক্তিযোদ্ধা এমএম নজরুল ইসলাম। পদাধিকার বলে সদস্য সচিব হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান। অপর দুইজন সদস্য হলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য্যরে মনোনীত মুক্তিযোদ্ধা এমএ সামাদ এবং জেলা প্রশাসকের মনোনীত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রসুল। এ কমিটির কাছে ২৫ জনের ওই তালিকা প্রেরন করা হয় যাচাই-বাছাই শেষে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে।
অবশ্য ২৫ জনের এ তালিকায় যাদের নাম গেজেট, লালমুক্তিবার্তা অথবা ভারতীয় সেক্টরে তালিকাভূক্ত রয়েছে সেইসব ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাইয়ের আওতাবহির্ভূত রাখার নির্দেশনা রয়েছে মন্ত্রনালয়ের। ২৫ জনের মধ্যে এমন নয়জনকে নোটিশ প্রদান করা হয়নি। এরা হলেন জালঝাড়া গ্রামের মরহুম ডা: নওশের আলী, হানুয়ার গ্রামের মরহুম আবদুল আজিজ সরদার, পারখাজুরা গ্রামের মরহুম ডা: ফজলুল রহমান,বাজেকুলটিয়া গ্রামের ঠাকুর দাস বৈরাগী, মহাদেবপুর গ্রামের আবদুর গফুর, ঝাঁপা গ্রামের নেছার আলী, তাজপুর গ্রামের আবু দাউদ, পাঁচপোতা গ্রামের আবদুল আজিজ এবং বাহাদুরপুর গ্রামের হরপ্রসাদ ব্যানার্জী।
বাকী ১৬ জনকে নোটিশ করা হয় বৈধ প্রমানপত্রসহ গত ৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত শুনানীতে হাজির হতে।এর মধ্যে অনুপস্থিত থাকায় তিনজনের প্রমানপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়নি। এরা হলেন খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার কোলা নোয়াগ্রামের আবদুল হালিম সরদার, সরদার গোলাম কিবরিয়া এবং যশোর পোষ্টঅফিস পাড়ার মোস্তাফিজুর রহমান। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি এমএম নজরুল ইসলাম জানান, যাচাই-বাছাই করে প্রমানপত্র সঠিক থাকা এবং উপস্থিত অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাক্ষিতে কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সাতজনের প্রমানপত্র বৈধ(প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা) হিসেবে গন্য করা হয়।
এরা হলেন, মনিরামপুর উপজেলার হাটাগাছা গ্রামের সুব্রত কুমর বৈরাগী, খালিয়া গ্রামের আবদুস সাত্তার, এড়েন্দা গ্রামের আহম্মদ আলী, বড়চেতলা গ্রামের আবদুল মজিদ মোড়ল, পৌরশহরের কামালপুরের ইসমাইল হোসেন, হাকোবার নারায়ন চন্দ্র সরকার এবং গাংড়ার সামছুর রহমান।অন্যদিকে বৈধপ্রমানপত্র প্রদর্শনে ব্যর্থ হওয়ায় পাঁচজনকে না মঞ্জুর করা অর্থাৎ অবৈধ হিসেবে গন্য করা হয়। এরা হলেন ভবানীপুর গ্রামের পুরঞ্জয় কুমার, হানুয়ার গ্রামের ছবেদ আলী, দিঘীরপাড় গ্রামের ইদ্রিস আলী, গোবিন্দপুর গ্রামের সামছুল আলম এবং পৌরশহরের হাকোবা এলাকার চিত্তরঞ্জন ভদ্র।
এছাড়া ডুমুরখালি গ্রামের নুরুল ইসলামের প্রদর্শিত প্রমানপত্রের সত্যতা নিয়ে চার সদস্যের কমিটির দুইজন সম্মত(পক্ষে) হলেও অপর দুইজন অসম্মতি(বিপক্ষে) প্রকাশ করেন। ফলে চুড়ান্ত প্রতিবেদনে নুরুল ইসলামের ক্ষেত্রে দ্বিধাবিভক্ত উল্লেখ করা হয়েছে। আর এসব বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, চার সদস্যের কমিটির স্বাক্ষরিত চুড়ান্ত প্রতিবেদন ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করা হয়েছে। যা ২৬ মার্চ সরকার প্রকাশ করবে।