মনিরামপুর (যশোর)প্রতিনিধি:
‘দাগি অপরাধীদের’ আটকের পর থানা থেকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে যশোরের মনিরামপুর থানা ঘেরাও করেছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টুর নেতৃত্বে দলের নেতা-কর্মীরা। রোববার সন্ধ্যায় বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের দুজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১৪ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে আজ সোমবার মনিরামপুর থানায় একটি মামলা করেছে। মামলায় থানায় অনধিকার প্রবেশ, সরকারি কাজে বাধা দান, ত্রাস সৃষ্টি এবং থানার পুলিশ তদারকি পোস্ট (সেন্ট্রি পোস্ট) ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশ মামলায় নাম উল্লেখ করা একজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে। তিনি হলেন মনিরামপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক মাকসিদুল আলম। গতকাল সন্ধ্যায় থানা ঘেরাওকালে বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেন, মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের ধরে আনছেন ঠিকই, কিন্তু রহস্যজনক কারণে তিনি আদালতে সোপর্দ না করে থানা থেকেই ছেড়ে দিচ্ছেন। তাঁদের দাবি, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ধরে এনে সাজানো মামলায় হাজতে পাঠানো হতো। চালানো হতো অকথ্য নির্যাতন। সে সময় পুলিশের নির্বিচার চাঁদাবাজির ভয়ে অসংখ্য নেতা-কর্মী বাড়ি তো দূরের কথা, আশপাশের এলাকায়ও থাকতে পারেননি। এখন দাগি অপরাধী হওয়ার পরও তাঁদের ছেড়ে দেওয়া ফ্যাসিস্টদের সহযোগিতার নামান্তর। কর্মসূচিতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু বলেন, আটকের পর দুই দিনে সাতজন চিহ্নিত অপরাধীকে ছেড়ে দিয়েছেন ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী। কেন ওসি এটা করছেন, তা বোধগম্য হচ্ছে না। এর মধ্যে নিশ্চয়ই কিন্তু আছে। সমাবেশে নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি থানা থেকে আসামি ছেড়ে দেওয়া বন্ধ না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দীক, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলাম, সদস্যসচিব সাইদুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বিল্লাল গাজী, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইউনুস আলী জুয়েল, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান ও সদস্যসচিব মাসুদ গাজী।
এ ঘটনার পর আজ মনিরামপুর থানার কনস্টেবল শেখর কুমার দত্ত বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় মনিরামপুর পৌরসভার স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী কামরুল ইসলাম এবং সদ্য বহিষ্কৃত মনিরামপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাকসিদুল আলমের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাত ১৪ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে সোমবার মনিরামপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ঘেরাও কর্মসূচি থেকে থানায় অনধিকার প্রবেশ করে ত্রাস সৃষ্টি এবং সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া থানার পুলিশ তদারকি পোস্ট (সেন্ট্রি পোস্ট) ভাঙচুর করা হয়েছে। ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, একজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, আসামি ধরে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। পুলিশ আসামি ধরে আদালতে সোপর্দ করে। জামিন পেয়ে বেরিয়ে এলে পুলিশের করার কিছুই থাকে না।