রিপন হোসেন সাজু:
যশোরের মনিরামপুরে জলাবদ্ধ ভবদহ এলাকায় ভাসমান টয়লেট চালু হতে চলেছে। দেশে প্রথমবারের মতো এধরণের ভাসমান টয়লেট চালু হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ভাসমান টয়লেটে প্রাকৃতিক কাজ সারতে পেরে ভূক্তভোগীদের দুর্ভোগ ঘুচবে বলেও আশা তাদের। মনিরামপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্নার (ইউএন’র) পরিকল্পনায় উপজেলা প্রশাসনের আর্থিক সহায়তা ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের কারিগরি সহযোগিতায় এ ভাসমান টয়লেট প্রকল্প চালু হচ্ছে। চলতি বছরের ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে যশোর ও খুলনা জেলার মনিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর, ফুলতলা ও ডুমুরিয়া উপজেলার তিন’শ গ্রামের প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এতে করে বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন ওই এলাকার মানুষ। বিশুদ্ধ খাবার পানির পাশাপাশি স্যানিটেশনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। বাধ্য হয়ে অনেকেই রাস্তায় টোংঘর বানিয়ে রাত্রি যাপন করছেন। কিন্তু প্রাকৃতিক কাজ সারতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। জলাবদ্ধতার কারণে রাস্তায় ছাড়া গ্রামের মধ্যে স্যানিটেশন স্থাপন অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী জয়দেব দত্ত জানান, মূলত ঝাপা বাওড়ে ভাসমান সেতুর প্রযুক্তি ব্যবহারে এই ভাসমান টয়লেট তৈরী করা হয়েছে। এতে ৫টি প্লাস্টিকের ড্রাম, কাঠ ও লোহার ফ্রেম এবং টিন ব্যবহৃত হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রতি ভাসমান টয়লেট তৈরীতে ৩৫ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে। ভাসমান টয়লেটের প্রধান সুবিধা এটি পানির উপর সহজেই ভাসতে পারবে। এই টয়লেটে একটি ড্রাম এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে ময়লা পানিতে পড়ে পরিবেশ দুষিত করবে না। ড্রাম ময়লায় ভর্তি সহজেই খুলে ফের স্থাপন করা যাবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না জানান, ভবদহ এলাকা সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে আমি লক্ষ করি জলবদ্ধতার কারনে স্যানিটেশনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ জনপদের মানুষকে। বিশেষ করে মহিলারা এ ভোগান্তির বেশী সম্মুখীন হচ্ছেন। তখনই আমি চিন্তা করি তাদের টয়লেটের সুব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তখন আমার মাথা আসে ঝাঁপা বাওড়ের ভসমান সেতুর প্রযুক্তির কথা। পরে সেটির কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ণ উপজেলা প্রশাসনের নিজ পরিকল্পনায় আমার ভাসমান টয়লেট তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি।