হোম অর্থ ও বাণিজ্য মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার বাতাস লেগেছে জ্বালানি তেলে

বাণিজ্য ডেস্ক:

মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে অপরিশোধিত তেলের দামে। সপ্তাহ শেষে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে সংঘাত নিয়ন্ত্রণের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়ে গেছে জ্বালানি তেলের দাম।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) জ্বালানি তেলের দাম এক ডলারেরও বেশি কমেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

বর্তমানে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্স ৭৯ সেন্ট কমে ব্যারেল প্রতি ৯১ দশমিক ৩৭ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড ফিউচার্স ৯১ সেন্ট কমে ব্যারেল প্রতি ৮৭ দশমিক ১৭ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

যে অঞ্চলে ইসরাইল ও হামাস যুদ্ধে জড়িয়েছে তা বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী অঞ্চল। ফলে, যুদ্ধের সীমানা বেড়ে গেলে, অর্থাৎ মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহ ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে, সপ্তাহ শেষে মিশর থেকে গাজা উপত্যকায় ত্রাণের বহর আসতে শুরু করেছে। যদিও আরবের নেতা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা কায়রোতে একটি শীর্ষ সম্মেলনে এক হয়েছিলেন, কিন্তু তারা কোনো যৌথ বিবৃতি দিতে পারেননি।

তবে তেল বাজার বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান ভান্দা ইনসাইটসের প্রতিষ্ঠাতা বন্দনা হারি বলেন, জিম্মিদের মুক্তির জন্য ইসরাইল গাজার উত্তরাঞ্চলে পরিকল্পিতভাবে অনুপ্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে, যা কূটনীতির জন্য একটি জানালা খুলে দিয়েছে। এটিকে তিনি অপরিশোধিত তেলের বাজারের জন্যে কিছুটা স্বস্তিরও মনে করেন।

হারি বলেন, স্থল অবরোধকে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে ইসরাইল-হামাস সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাব্য কারণ হিসাবে দেখা হচ্ছে, যা গত ১৫ দিন ধরে অপরিশোধিত তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে ঝুঁকির কারণ হয়ে আছে।

এএনজেড রিসার্চের বিশ্লেষকরা আশা করেছেন, ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়বে না এবং তেলের সরবরাহ ব্যাহত হবে না। অর্থাৎ যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়লে তেলের সরবরাহ বিঘ্নিত হবে, এই আশঙ্কা বিশ্লেষকদের মনে কাজ করছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় সংঘাত নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারা অপরিশোধিত তেলের বাজারের জন্যে ভালো খবর।

কিন্তু ইসরাইল গাজায় বোমা বর্ষণ করেছে, তাদের বিমান লেবাননে আঘাত হেনেছে বলে গণমাধ্যম জানিয়েছে। আর এর প্রভাবেই সোমবার এশিয়ায় শেয়ারের দাম কমেছে।

পেট্রোলিয়াম রফতানিকারকদের সংগঠন ওপেক ও রাশিয়া তেলের উত্তোলন হ্রাসে সমঝোতায় পৌঁছেছে। সম্প্রতি সৌদি আরব ও রাশিয়া উত্তোলন হ্রাস বজায় রাখতে একমত হয়েছে। ফলে তেল সরবরাহের একটা চাপ এমনিতেই বাজারে আছে। এ পরিস্থিতিতে ওপেক সদস্য ভেনেজুয়েলার ওপর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভেনেজুয়েলার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার অন্যতম কারণ তেল সরবরাহে চাপ কমানো।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরপর রোববার (২২ অক্টোবর) কানাডা, ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি ও ইতালির নেতাদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া সংঘাতের সমাধানে ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসের নেতারা এ সপ্তাহে ইসরাইল সফর করবেন বলে জানা গেছে। ফলে এসব কূটনৈতিক উদ্যোগের সঙ্গে অপরিশোধিত তেলের বাজারের উঠানামার লাগাম টেনে ধরার সম্পর্ক সহজেই অনুমেয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন