হোম এক্সক্লুসিভ ‘ভোট আসলে আমাগো খোঁজে,পরে কেউ খোঁজ নেয় না’

‘ভোট আসলে আমাগো খোঁজে,পরে কেউ খোঁজ নেয় না’

কর্তৃক
০ মন্তব্য 120 ভিউজ

তপন চক্রবর্তী,তালা (সাতক্ষীরা):

ভোট আসলে আমাগো খোঁজে,পরে কেউ খোঁজ নেয় না। আমাগো যাতায়াতের রাস্তা নেই বললে চলে। কেউ অসুস্থ্য হলে হাসপাতালে নেওয়ারও তেমন ব্যবস্থা নেই। একটি দ্বীপের মধ্যে আমাগো বসবাস। রাস্তা মেরামতের নামে সরকারি বরাদ্দ আসলেও তা দিয়ে কাজ হয় না।’ এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন তালা উপজেলার কাটবুনিয়া গ্রামের সাধনা মন্ডল।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে বাড়ির পুরুষরা সবাই কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে মাছের ঘেরে শ্রমিকের কাজ করছি। তার সংসারে ছেলে-মেয়েসহ ছয় জন মানুষ। সকাল ৮ থেকে বেলা ১ টা পর্যন্ত কাজ করে পায় ২০০ টাকা । এই টাকা দিয়েই চলে আমাদের সংসার। খেয়ে না খেয়েও দিন চললে খোঁজ নেওয়ার লোক নেই। সরকারি কোনো অনুদান আসলেও আমাদের পর্যন্ত আসে না। ওরা সব ভাগ করে নেয়। কোথায় যাবো, কি করবো। তাই বাধ্য হয়ে মাছের ঘেরে জন দিতে আইছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলা থেকে ১২ কিলোমিটার পূর্বদিকে কাটবুনিয়া গ্রাম। এ গ্রামে প্রায় ৩০০ পরিবারের দুই হাজার ৫০০ মানুষের বসবাস। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও তাদের গ্রামে তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। হাজরাকাটি বাজার থেকে কাটবুনিয়া পর্যন্ত যেতে সড়কের দুই পাশে রয়েছে মৎস্য ঘের। মৎস্য ঘেরের পানির ঢেউ-এ সড়কও বিলীন হয়ে যায়। প্রতিবছর সড়ক সংস্কার করলেও মৎস্য ঘেরের কারণে বিলিন হয়ে যায়।

কাটবুনিয়া গ্রামের মহিলা শ্রমিক তৃপ্তি মন্ডল জানান, তাদের গ্রামের সাথে শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বললেই চলে। তাদের গ্রামে কেউ অসুস্থ্য হলে সড়ক পথে নিয়ে গেলে তিনি আরও অসুস্থ্য হয়ে যাবে। এজন্য কোনো সময় নৌকায়, আবার কোনো সময় ঘাড়ে করে নিয়ে যেতে হয়।

একই গ্রামের বাসিন্দা সাধনা মন্ডল জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে বাড়ির লোক বেকার বসে আছে। ঘের মালিকরা ২০০ টাকা করে মহিলা শ্রমিক নিয়ে কাজ করছে। এজন্য তিনি কাজে আসছে। এমন বক্তব্য ওই গ্রামের অধিকাংশ মানুষের।

মৎস্য ঘের মালিক সরদার ইমান আলী জানান, সড়কটির পাশে ঘের রয়েছে। প্রতিবছর যে টুকু ভেঙ্গে যায়, তা আবার মেরামত করে ঘেরে পানি উঠানো হয়। তবে সড়কটি সংস্কারের প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

খলিলনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান রাজু জানান, কাটবুনিয়াবাসির যাতয়াতের একটি মাত্র সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় সমন্বয় কমিটির সভায় প্রস্তাবটি উত্থাপন করে ছিলাম। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সড়কটি উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া আশ্বাস দেওয়া হয়। তবে সড়কের ক্ষতির কারণ হিসেবে দুই পাশের ঘের মালিকদের চিহ্নিত করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

তালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার জানান, প্রথমে ইটের সলিং ও পরে কিছু অংশ এইচবিবি দ্বারা উন্নয়ন করা হয়। কিন্তু সড়কের দুই পাশে মৎস্য ঘেরের কারণে সড়কটি চলাচলের মত অবস্থা নেই। এজন্য সাধারণ মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছে। সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন