রাজনীতি ডেস্ক:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বাগেরহাটে সভা সমাবেশে সরব আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও নেতাকর্মীরা। দলীয় কোন্দলে রয়েছে বিএনপি। বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর মোংলাকে ঘিরে জেলার পরিচিত রয়েছে দেশজুড়ে।
জেলায় ৯টি উপজেলা ও ৩টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন ৪টি। বাগেরহাট ১ ও ২ আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট একক প্রার্থী। বাগেরহাট ৩ ও ৪ আসনে একাধিক প্রার্থী। এছাড়া প্রতিটি আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।
পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পর বদলে যায় এজেলার আর্থসামাজিক অবস্থা। বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে যোগাযোগ ব্যবস্থায়। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বেশ ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ। সংসদ নির্বাচন নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। জেলার ভোটাররা জানান, বিএনপি নির্বাচনে আসলে লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যেই।
সুন্দরবন সংলগ্ন ও বঙ্গোপসাগর ঘেঁষা বাগেরহাট জেলার আয়তন ৫ হাজার ৮৮২ বর্গকিলোমিটার। জেলার ৪টি সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ১২লাখ ৭৮ হাজার ৮৬০। এর মধ্যে পুরুষ ৬ লাখ ৪২ হাজার ৭৪০ জন, আর নারী ভোটার ৬ লাখ ৩৬ হাজার ১১৩ জন।
বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, মোল্লাহাট ও ফকিরহাট) আসন: চিতলমারী, ফকিরহাট ও মোল্লাহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত বাগেরহাট-১ আসন। আওয়ামী লীগের হেবিওয়েট প্রার্থী থাকায় সাধারণ মানুষের আগ্রহ একটু বেশি। শেখ পরিবারের ঘাটি খ্যাত এই আসন থেকে বরাবরই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে থাকেন।
দলীয় সূত্র অনুযায়ী, এবারও এই আসন থেকে শেখ হেলাল উদ্দিন নির্বাচন করবেন। তবে আওয়ামী লীগের রিজার্ভ আসন হিসেবে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। দ্বাদশ সংসদ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যদি অংশগ্রহণ করে, তবে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান এবং ওয়াহিদুজ্জামান দীপু প্রার্থী হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
১৯৯১ সালে এ আসন থেকে তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মো. মোজাম্মেল হোসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে উপনির্বাচনে এবং ২০০১, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে এ আসন থেকে ১৯৯০ সালের পর বিএনপি বা অন্যকোনো দলের নির্বাচিত হওয়ার তেমন কোনো রেকর্ড নাই। ১৯৯৬ সালে বিএনপির বর্তমান জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান নির্বাচিত হয়েছিলেন। দেড় মাস পরে ওই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করে, আবারও নতুন নির্বাচন হয়। নতুন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাগেরহাট ১ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫২ হাজার ৬৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৩ জন এবং নারী ভোটার রয়েছে ১লাখ ৭৩ হাজার ১৪১ জন।
বাগেরহাট-২ (সদর ও কচুয়া) আসন: খানজাহানের পুণ্যভূমি বাগেরহাটের-২ আসনে ১৯৯১ সালের পর থেকে যে দলের প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, সেই দলই সরকার গঠন করেছে এমনই প্রচলিত রয়েছে। কচুয়া ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসন জাতীয় নির্বাচনে বেশ প্রভাব ফেলে। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের লক্ষ্য থাকে হেভিওয়েট প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সেই পথেই হাঁটবে। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের অন্যতম ভরসা বঙ্গবন্ধুর নাতি, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার ভাতিজা শেখ সারহান নাসের তন্ময়। তন্ময়ের ওপর ভরসা করে আওয়ামী লীগ নির্ভার থাকলেও বিএনপি পেছনে পড়ে আছে দলীয় দ্বন্দ্বের কারণে। আগামী নির্বাচনের প্রায় ৪ মাস বাকি থাকতেই কয়েক মাস আগে শুরু হয়েছে দলটির প্রার্থী বাছাই দ্বন্দ্ব। একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকায় দলটির নেতা-কর্মীরা রয়েছেন দ্বিধায়। তবে এর মধ্যেই জনসংযোগ করছেন, বাড়িয়েছেন কর্মসূচি। গুরুত্বপূর্ণ আসনটিতে ১৯৯১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দুবার বিএনপি এবং চারবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। প্রতিবারই দলগুলোর হেভিওয়েট প্রার্থীরা নির্বাচন করেন।
সবশেষ ২০১৮ সালে জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালামকে হারিয়ে শেখ হেলাল উদ্দিনের ছেলে শেখ তন্ময় এমপি হন। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ধারণা, এবারও শেখ হাসিনা তাঁর ভাতিজা শেখ তন্ময়কে মনোনয়ন দেবেন। বিএনপি থেকে এম এ সালাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিম মনোনয়ন চাইতে পারেন। বাগেরহাট ২ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ১৯ হাজার ৫৫৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৫৯ হাজার ১৯২ জন এবং নারী ভোটার রয়েছে ১লাখ ৬ হাজার ৩৬৪ জন।
বাগেরহাট-৩ (মোংলা-রামপাল) আসন: দেশের দ্বিতীয় সামুদ্রিক বন্দর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক হাব মোংলা-রামপাল উপজেলা। এ দুই উপজেলা ও মোংলা পোর্ট পৌরসভা নিয়ে বাগেরহাট-৩ আসন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসনের রাজনীতি সরগরম। সম্ভাব্য প্রার্থীরা যোগাযোগ রক্ষা করছেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে। বিভিন্ন উৎসবে সাধারণ মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। রাজনীতির মাঠ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দখলে থাকলেও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সক্রিয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরাও। বিগত নির্বাচনী ফলাফল বিবেচনা করলে এই আসনকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলা যায়।
১৯৯১ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি নেতা এ এস এম মোস্তাফিজুর রহমানকে হারিয়ে তালুকদার আবদুল খালেক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে তিনি পুনরায় নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বিএনপির সঙ্গে জোট গঠন করে জামায়াতে ইসলামীর নেতা গাজী আবু বকর সিদ্দিক নির্বাচন করেন এবং তিনি তালুকদার আবদুল খালেকের কাছে পরাজিত হন। ২০০৮ সালে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুল ওয়াদুদকে হারিয়ে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তালুকদার আবদুল খালেক। পরে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তালুকদার আবদুল খালেক সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং উপনির্বাচনে তাঁর সহধর্মিণী বেগম হাবিবুন নাহার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে তালুকদার আবদুল খালেক এই আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। পরে ২০১৮ সালের প্রথম দিকে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য আবারও তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। একই বছরের ৪ জুন উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বেগম হাবিবুন নাহার।
সবশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতের আব্দুল ওয়াদুদকে হারিয়ে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বেগম হাবিবুন নাহার। বর্তমানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। আসন্ন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে তালুকদার আবদুল খালেকের নাম ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। সেই কারণে ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য বেগম হাবিবুন নাহার এ আসন থেকে নির্বাচন করবেন এমন প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের।
তবে রামপাল ও মোংলা আসনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হওয়ার জন্য চিত্রনায়ক শাকিল খান, ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান ও খুলনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শেখ মো. আবু হানিফ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। সাধারণ মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড়, বাজার ও রাস্তার পাশে ব্যানার ও পোস্টার সাঁটিয়েছেন। তাদের অনুসারীরাও ঢিমেতালে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে বিএনপি জামাত জোট থাকলে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাড. আব্দুল ওয়াদুদ নির্বাচন করবেন এমন ধারণা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ড. শেখ ফরিদুল ইসলামও প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় পার্টি বাগেরহাট জেলা কমিটির সহসভাপতি ও রামপাল উপজেলা কমিটির সভাপতি এমএ সবুর এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মাওলানা আব্দুল আজিজ নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। বাগেরহাট ৩ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৭০৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৭ হাজার ৯১ জন এবং নারী ভোটার রয়েছে ১লাখ ২৭ হাজার ৬১৩ জন।
বাগেরহাট ৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসন: ১৯৯১ সালে এই আসনে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর শেখ আব্দুল আজিজ পরাজিত হন। জামায়াত নেতা মুফতি আব্দুস সাত্তার আকন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে বিএনপির প্রার্থী আলতাফ হোসেনকে হারিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মো. মোজাম্মেল হোসেন নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে ডা. মো. মোজাম্মেল হোসেনকে হারিয়ে জামায়াত নেতা মুফতি আব্দুস সাত্তার আকন আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে জামায়াত নেতা অধ্যাপক শহিদুল ইসলামকে হারিয়ে ডা. মো. মোজাম্মেল হোসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে নিজদলের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহা পরিদর্শক আব্দুর রহিম খানকে হারিয়ে ডা. মো. মোজাম্মেল হোসেন আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ডা. মো. মোজাম্মেল হোসেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের পক্ষ থেকে জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ আব্দুল আলিম, ইসলামী আন্দোলন বংলাদেশের মাও. আ. মজিদ হাওলাদার, বিএনএফের রিয়াদুল ইসলাম আফজাল, কমিউনিস্ট পার্টির শরিফুজ্জামান তালুকদার, জাতীয় পার্টির সোমনাথ দে এই আসন থেকে নির্বাচন করেন। ৫ দলের প্রার্থীকে পেছনে ফেলে ডা. মোজাম্মেল হোসেন এ আসন থেকে ৪র্থ বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেনের মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য হয়। এ বছর ২১ মার্চ উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির সাজন কুমার মিস্ত্রিকে হারিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য হন। বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে এই আসনে দুই দলের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করেন সাধারণ ভোটাররা।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এই আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী। প্রার্থী হওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন তারা। রাকসুর সংগ্রামী ছাত্রনেতা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, আওয়ামী লীগ নেতা বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ড. আব্দুর রহিম খান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. জামিল হোসেনের নাম প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছে।
অন্যদিকে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে প্রার্থী নিয়ে এখনো দরকষাকষি চলছে বলে জানিয়েছেন দল দুটির নেতাকর্মীরা। তারপরও বিএনপির একাধিক নেতা এই আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মাঝে মাঝে গণসংযোগ ও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন তারা। এদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ড. ওবায়দুর ইসলাম, তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির।এ ছাড়া ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে জামায়াত-বিএনপি জোটের হয়ে প্রতিদ্বন্ধীতা করা জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ আব্দুল আলিম আবারও প্রার্থী হতে পারেন।
অপরদিকে বাগেরহাট জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও শরণখোলা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান প্রার্থী হতে পারেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা আ. মজিদ হাওলাদার প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। বাগেরহাট ৪ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫২ হাজার ৫৩১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭৭ হাজার ৫৩৪ জন এবং নারী ভোটার রয়েছে ১লাখ ৬৩ হাজার ৬১৩ জন।
বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ভূইঁয়া হেমায়েত উদ্দিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় বাগেরহাট জেলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সিডর ও আইলা বিধ্বস্ত শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এক সময়ের মৃত মোংলা বন্দর সচল হয়ে ব্যবসা বাণিজ্যে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। নির্মিত হয়েছে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। মোংলা-খুলনা মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠেছে বিভিন্ন শিল্প কারখানাসহ নানা স্থাপনা। কর্মসংস্থান হয়েছে হাজার হাজার বেকার যুবকের। একই সঙ্গে চলমান রয়েছে এ জেলার বেশ কয়েকটি বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আগামী নির্বাচনে বাগেরহাট ৪টি আসনেই আওয়ামী লীগ জয়ী হবে। জেলার মানুষ বিএনপি-জামায়াতের আমলের সন্ত্রাসও নৈরাজ্য আর দেখতে চায় না। আগামী নির্বাচনে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদেরই ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে বলে জানান এই নেতা’।
এদিকে,জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন তালিম বলেন, ‘জেলা বিএনপির মধ্যে এখন আর দ্বন্দ্ব নেই। বিএনপি গণতান্ত্রিক ও নির্বাচনমুখী দল। জেলা বিএনপি সুসংগঠিত। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আন্দোলন করছি। আমাদের একদফা দাবি মেনে নিলে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।’