অনলাইন ডেস্ক:
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সম্প্রতি চারশ’ থেকে পাঁচশ’ ভেন্টিলেটর এবং অক্সিজেন জেনারেটর আনা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন। কিন্তু বাস্তবে এর কোনও প্রতিফলন দেখা যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে কোনও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
জানা গেছে, দেশের মোট জনসংখ্যার জন্য ৫২০টি সরকারি হাসপাতাল এবং ৭৩৭টি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ-তে মাত্র ১২৬৭টি ভেন্টিলেটর মেশিন সংযুক্ত আছে। এরমধ্যে সরকার মাত্র ১৯০টি ভেন্টিলেটর করোনার চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ করেছে, যার মধ্যে ঢাকাতে আছে ৭৯টি এবং বাকিগুলো দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির প্রধান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নিজেই মাসের শুরুতে বলেছিলেন, সংকট মোকাবিলায় চার থেকে পাঁচশ’ ভেন্টিলেটর ও অক্সিজেন জেনারেটর আমদানি করা হচ্ছে। ৯ এপ্রিলের একটি প্রেস রিলিজেও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বরাতে জানানো হয়, আরও ৩৮০টি ভেন্টিলেটর আমদানির প্রক্রিয়ায় আছে।
কিন্তু এর অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) মো. সেরাজুল ইসলাম জানান, ২৫০টি ভেন্টিলেটরের জন্য ওয়ার্কঅর্ডার হয়েছে। তবে এসব চীন থেকে আনা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
তবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সিনিয়র কর্তমর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিগগিরই ভেন্টিলেটর আনার মতো কোনও অগ্রগতি ঘটেনি।
ভেন্টিলেটর আনার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা জানি না কেন মন্ত্রী এসব কথা বলেছেন, তবে নতুন ভেন্টিলেটর আনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা এর অধিদফতর থেকে কোনও ওয়ার্কঅর্ডার হয়নি।’
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ যদি ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ অব্যাহত রাখেও, তারপরও এটি আহামরি ফলপ্রসূ হবে না। কারণ আইসিইউ চালানোর মতো পর্যাপ্ত দক্ষ লোকবলের অভাব রয়েছে এখানে।
অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল) ড. মো. আমিনুল হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশ যদি এখন কোনও অর্ডারও দেয়, তারপরও ভেন্টিলেটর মেশিন আসতে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে।’ এছাড়া শ্বাসনালিতে বিকল্প টিউব বসিয়ে ফুসফুসে বাতাস পাম্প করে রোগীর নিঃশ্বাসে সাহায্য করবে এমন সব সরঞ্জামসহ ভেন্টিলেটর সহজেই পাওয়া যাবে কিনা সেটাও একটা ব্যাপার বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কয়েকদিন একাধিকবার ফোন করা হলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ ফোন রিসিভ করেননি।