হোম খুলনাযশোর ভবদহ জলাবদ্ধ এলাকায় বোরো আবাদ না হওয়ার আশংকা

ভবদহ জলাবদ্ধ এলাকায় বোরো আবাদ না হওয়ার আশংকা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 17 ভিউজ

রিপন হোসেন সাজু:

মনিরামপুরের ভবদহের জলাবদ্ধতা পাঁচ মাস পার হলেও তিন ইউনিয়নের মানুষের কাটেনি মানবিক বিপর্যয়। বিলের পানি তো দূরে থাক বেশির ভাগ বসত বাড়ির উঠানের জল নামেনি, উঠানো যায়নি সাঁকো। দেখা দিয়েছে বোরো আবাদ না হওয়ার আশংকা। শনিবার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুলটিয়া, নেহালপুর ও মনোহরপুর ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামের বসত বাড়ির উঠানের জল নামেনি, অনেক রাস্তায় এখনো হাঁটু পানি। কুলটিয়া ইউনিয়ন সংলগ্ন বিল বোকড় ও বিল কেদারিয়া এখনো পানিতে থৈথৈ। একখন্ড উচু জমি খুঁজে পাওয়া দুঃষ্কর যেখানে ধানের বীজতলা তৈরী করা সম্ভব। প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে ওই এলাকায় বোরো আবাদ হয়ে থাকে। কিন্তু এ বছর চাষাবাদ হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই। এই ইউনিয়নের হাটগাছা, বাজেকুলটিয়া, সুজাতপুর, মশিয়াহাটী, কুলটিয়া, লখাইডাঙ্গা, মহিষদিয়া, আলীপুর, পোড়াডাঙ্গা, পদ্মনাথপুর ও ডাঙ্গামহিষদিয়া এলাকা সর্বোচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়া নেহালপুর ইউনিয়নের পাঁচাকড়ি, নেহালপুর ও বালিধা গ্রামের আংশিক এবং মনোহরপুর ইউনিয়নের ইনায়েতপুর, খাকুন্দি, কপালিয়া, মনোহরপুর ও ভবানীপুর গ্রামেরও ওই একই অবস্থা। ওই দুই ইউনিয়নের প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে এ বছর বোরো আবাদ না হওয়া শংকা তৈরী হয়েছে। কুলটিয়া ইউনিয়নের হাটগাছা গ্রামের কৃষক শিমুল বৈরাগী জানান, গত বছরের ধান এখনো গোলায় কিছু আছে। তাই সংসার চালাতে পারছি। এ বছর যে অবস্থা দেখছি তাতে ফসল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। আগামী বছর কীভাবে সংসার চালাবো বলতে পারছি না। বাজেকুলটিয়া গ্রামের কৃষক গুরুপদ বলেন, উঠানের জল এখনো নামেনি আর ধান চাষ হওয়া তো দূরের কথা। ধানের পাতা (বীজতলা) ফেলার সব জমিতে হাঁটু জল। নেহালপুর ইউনিয়নের পাঁচাকড়ি গ্রামের সুবল দাস বলেন, এবার ফসল না হলে না খেয়ে মরতে হবে। মনোহরপুর ইউনিয়নের খাকুন্দি গ্রামের ফিরোজ জানান, কোন রকমে টিকে আছি। একটামাত্র ফসল পাই সেটাও না হওয়ার সম্ভাবনা। কি করবো কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। ওদিকে ভবদহ ¯øুইচগেট ঘুরে দেখা যায়, সেচযন্ত্রগুলো চলছে। কিন্তু পানি যে হারে কমছে তাতে আগামী দুইমাসেও ফসল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রেখা বিশ্বাস ও অনাথ বন্ধুর সাথে আলাপকালে তারা জানান, গত বছর এই এলাকার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছিল। কিন্তু পানি যেহারে কমছে তাতে বোরো আবাদ না হওয়ার শংকা দেখা দিয়েছে এবং সেটা যদি হয় তবে আগামীতে মারাত্মক খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন