আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
একেবারে টান টান উত্তেজনা। একবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এগিয়ে, তো আরেকবার প্রতিদ্বন্দ্বী শুভেন্দু অধিকারী। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের অন্যতম নজরকাড়া কেন্দ্র নন্দীগ্রামে তুমুল লড়াইয়ের শেষে জয়ের হাসি হাসলেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) শুভেন্দু অধিকারী। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক হাজার ৬২২ ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন।
এর আগে বিকেলে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মমতা বন্দোপাধ্যায় সেখানে এক হাজার ২০১ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যার পর পরই বলা হয়, সার্ভারের ত্রুটির কারণে সঠিকভাবে কিছু জানা যায়নি। তারপরই বিজেপির প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর জয়ের খবর আসে।
শুভেন্দু অধিকারী পশ্চিমবঙ্গের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি এক হাজার ৬২২ ভোটে জয়ী হয়েছি।’
অপরদিকে নিজে হেরে যাওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘নন্দীগ্রাম যে রায় দেবে মাথা পেতে নেব।’ ফলাফলের এই বিভ্রান্তি নিয়ে আদালতে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে নিজে হারলেও দল বিপুল ভোটে জেতায় রাজ্যের মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মমতা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিজয় বার্তা ও শুভেচ্ছা আসছে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে।
নির্বাচনের আগে এই নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন ৫০ হাজার ভোটে হারানোর। ভোটের আগে নন্দীগ্রামে প্রচারের এক সভা থেকেই মমতা ঘোষণা করেছিলেন, তিনি নন্দীগ্রাম থেকে ভোটে লড়বেন। নন্দীগ্রাম তাঁর কাছে তাঁর লাকি (সৌভাগ্যের) জায়গা বলেও দাবি করেন।
আর এখান থেকে লড়ার জন্যই মমতা নিজের নির্বাচনি কেন্দ্র কলকাতার ভবানীপুরের আসনটি ছেড়ে দিয়েছিলেন ঘনিষ্ঠজন ও সাবেক বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি সেখানে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু মমতা হারলেন।
ভোটের শুরু থেকেই সবার নজর ছিল নন্দীগ্রামের ওপর। নন্দীগ্রাম মমতার কাছে ‘প্রেস্টিজ ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠেছিল। কারণ, শুভেন্দু অধিকারী এর আগের বিধানসভা নির্বাচনেই মমতা সরকারের বন ও পরিবেশমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। ভোটের আগে গত বছর ডিসেম্বরে দলত্যাগ করে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। শুভেন্দুকে বলা হতো, মমতার ‘লেফটেন্যান্ট’। দল ত্যাগের পর মমতা তাঁর নাম দেন ‘গদ্দার’ বা ‘গাদ্দার’।
এই নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন দশকের বেশি সময়ের বাম-জামানার অবসান ঘটিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে বিশাল ব্যাবধানে জয় পেতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সব বুথ ফেরত সমীক্ষা এবং জল্পনাকে ভুল প্রমাণিত করে তৃতীয়বারের জন্য ফের ক্ষমতায় ফিরতে চলেছেন মমতার তৃণমূল। শহর কলকাতা থেকে জেলায় জেলায় বিজেপির হেভিওয়েট প্রার্থীদের হারিয়ে তৃণমূলের প্রার্থীরা জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন।