বাণিজ্য ডেস্ক:
প্রস্তাবিত বাজেটকে কেন বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য বলেছেন, সেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম। শনিবার (৮ জুন) রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই আইকন ভবনে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ২০২৪-২০২৫ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতিকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘আপনি বলেছেন, বাজেটের আকার বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য। এরপরে প্রতিটি ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের বিষয় নিয়ে এসেছেন। রাজস্ব আদায়ের সম্ভাবনাও চ্যালেঞ্জের। আবার আপনি বলছেন, বাস্তবসম্মত। আপনার কথা শুনে মনে হয়, আপনি সরকারের মুখপাত্র, ব্যবসায়ীদের মুখপাত্র না। ব্যবসায়ীদের অন্য কর্মসূচিতে আপনি যেভাবে নানান সমস্যার কথা বলেন। আজ বাজেট উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এমনভাবে কথা বলছেন যেন আপনারা স্বর্গে বাস করছেন। এই বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব কেনো বলেছেন, তার পাঁচটি কারণ যদি বলেন।’
জবাবে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, লিখিত বক্তব্যে যেসব বিষয় আমি পড়ে শুনিয়েছি, সেগুলো আপনারা শুনেছেন। এখন একটা প্রশ্ন করবেন, যেন জিনিসটা পরিষ্কার হয়। আপনি এমনভাবে বলেছেন, যেন পুরো বাজেটে আমরা সরকারের পক্ষে। সরকারের পক্ষে কথা না, যেটা বাস্তব। গত কয়েক বছরে ১০ থেকে ১২ শতাংশ হারে বাজেট বৃদ্ধি করা হয়েছে। এবার বাড়ানো হয়েছে পাঁচ শতাংশের কম।
‘আমরা মনে করছি, এই বাজেট বাস্তবসম্মত। এটা উচ্চাভিলাষী বাজেট না। এটা ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বেশি হলে বলতাম এটা উচ্চাভিলাষী বাজেট। কিন্তু এটা সেই বাজেট না। যে কারণে বলেছি, বাজেট বাস্তবসম্মত’, যোগ করেন তিনি।
মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আমরা সরকারের পক্ষেও না, বিপক্ষেও না। আমরা ব্যবসায়ীরা সরকার ও সাধারণ মানুষের মধ্যকার সেতু। কাজেই এখানে আমরা নিজেদের বক্তব্য বলেছি। যেটা প্রয়োজন, সেটা বলেছি।’
কালো টাকা সাদা করার যে বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন যে, ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে এবার এই ধারাটি বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি দুর্নীতিকে আরও উৎসাহিত করছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা হলো কালো টাকা সাদা করা, আরেকটি হচ্ছে ইনফরমাল অর্থনীতি। কেউ যদি মূল পেশার পাশাপাশি অন্য কোনো ব্যবসা করেন, তিনি যদি সেটা আয় হিসেবে ভুলবশত না দেখান, সেটাকে দেখানোর জন্য এই সুযোগ দেয়া হয়েছে। আমাদের ইনফরমাল মার্কেটটা অনেক বড়। সৎ ব্যবসায়ী কিন্তু ভুলবশত কর দিতে পারেননি, সেটা সংশোধনের জন্যই এটা করা হয়েছে।
কর ফাঁকি বের করতে কর কর্মকর্তাদের পুরস্কার দেয়া হয়। এতে আইনের অপপ্রয়োগ হয়। এটার ব্যাখ্যা দাবি করলে মাহবুবুল আলম বলেন, ‘তাদেরকে ডিভিডেন্ট না দিয়ে, অন্যভাবে পুরস্কার দিতে বলেছি। আর একসময় কর ন্যায়পাল ছিল, সেই প্রস্তাবও আমাদের রয়েছে।’
কী করলে মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে- এমন প্রশ্নে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘আমরা বলেছি, সেফটি নেট বাড়াতে হবে। ১ কোটি ২৫ লাখ লোককে ডাল-তেল-চিনি ও বিধবা ভাতা দিচ্ছে। এতে মূল্যস্ফীতি কমে যাওয়ার কথা। আমার মনে হয়, ধীরে ধীরে মূল্যস্ফীতি কমে যাবে।’