হোম অর্থ ও বাণিজ্য বাংলাদেশ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দিকে ধাবিত হচ্ছে: এফবিসিসিআই সভাপতি

বাণিজ্য ডেস্ক:

বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আর তাই এই সম্ভাবনাময় অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিন।

শনিবার (২৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলের বলরুমে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং সুপার প্রজক্ট কনসোর্টিয়ামের যৌথভাবে আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বেসরকারিখাতের অংশগ্রহণ’ শীর্ষক জাতীয় সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠানে জসিম উদ্দিন একথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই শুধুমাত্র ঢাকাতেই নয়, বরং সমগ্র বাংলাদেশের ঝুঁকি মোকাবেলায় একটি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা জরুরি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের তৈরি পোশাক খাতে বিশ্বমানের বিধিমালা অনুসরণ করা হচ্ছে এবং শিল্পের অন্যান্য খাতেও এ ধরনের বিধিমালা নিশ্চিত করা জরুরি। তাই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও অধিদফতরের সক্ষমতা বাড়তে হবে।

এক্ষেত্রে সরকারের নেয়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি জনগণ ও শিল্পমালিকদের সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় কার্যকর ব্যবস্থাপনার স্বার্থে প্রযুক্তির ব্যবহার, অর্থায়ন এবং পিপিপি’র (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি।

অনুষ্ঠানে ‘প্রাইভেট সেক্টর ইমার্জেন্সি অপরাশেন সেন্টারের (পিইওসি) ওয়েবসাইট’ উদ্বোধন করা হয়। যেখানে দুর্যোগ মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের তথ্যাদি এবং অগ্নি নির্বাপণে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ব্যবহার ও প্রাপ্তির বিভিন্ন তথ্য সমন্বিত করা হয়েছে।

সিম্পোজিয়ামের উদ্বোধনী বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, ‘শিল্পখাত আমাদের অর্থনীতির প্রাণ, তাই অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের বৃহত্তর স্বার্থে শিল্পের পাশাপাশি জনজীবনে যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় কার্যকর সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া ও এর বাস্তবায়ন একান্ত প্রয়োজন।

দেশের জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান প্রায় ৩৬ শতাংশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামগ্রিক অর্থনীতিতে সব ধরনের দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় কার্যকর উদ্যোগ নেয়া জরুরি।

তিনি বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির বর্তমান সময়ে যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকবেলায় নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতের কোনো বিকল্প নেই। এ ধরনের প্রযুক্তি ও অবকাঠমো নির্মাণে বেসরকারিখাতকে উৎসাহিত করে আর্থিক ও নীতি সহায়তা করা একান্ত প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়াও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, নিরাপদ ভবন নির্মাণ নিশ্চিতে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে।

যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারি ও বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়নের কোনো বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় তথ্য-প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে মন্তব্য করে বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান সব স্তরে এ ধরনের নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতে সরকারের আর্থিক সহযোগিতা ও নীতি সহয়তা অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেন।

অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দক্ষতা ও সক্ষমতা আনার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার ওপর গুরুত্ব দেন।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), এ্যাকশনএইড বাংলাদেশ, ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন যৌথভাবে ‘সুপার প্রজক্ট কনসোরটিয়াম’ বাস্তবায়ন করছে, যার সহায়তায় রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড।

এছাড়াও সিম্পোজিয়ামে ‘দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় ফিন্যান্সিং স্ট্রাটেজি’ এবং ‘দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক ২টি প্যারালাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নির্ধারিত আলোচকরা বিষয়বস্তুর ওপর বিস্তারিত আলোকপাত করেন।

ঢাকা চেম্বারের উর্ধ্বতন সহসভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন