হোম অর্থ ও বাণিজ্য বর্তমান কূটনীতি হবে বাণিজ্য-অর্থ সংক্রান্ত: প্রধানমন্ত্রী

বাণিজ্য ডেস্ক :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও পণ্যের গুণগত মান বাড়াতে গবেষণার উদ্যোগ নিতে হবে। বর্তমান কূটনীতি হবে বাণিজ্য ও অর্থ সংক্রান্ত। বাণিজ্য মেলার নতুন স্থানে ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের খরচ ও ব্যয় কমবে বলেও জানান সরকারপ্রধান।

শনিবার (১ জানুয়ারি) পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বিশ্বে নতুন বাজার খোঁজার পাশাপাশি রপ্তানি বাড়াতে পণ্যের বহুমুখীকরণ জরুরি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও পণ্যের গুণগত মান ধরে রাখতে গবেষণা করতে হবে উদ্যোক্তাদের। বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তির উন্নয়নে এ উদ্যোগ রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ীদেরকেই নেয়ারও তাগিদ দেন তিনি।

সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পূর্বাচলে ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা জানান, সময় এখন বাংলাদেশের এই কথা মাথায় রেখে সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

অবশেষে স্থায়ী কাঠামোতে শুরু হলো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। নতুন বছরের প্রথম দিন সকালে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে শেরে বাংলা নগরে চলে আসা বাণিজ্য মেলা এবার পূর্বাচলে নতুন ঠিকানায়। করোনার কারণে গত বছর অনুষ্ঠিত না হলেও দেশি-বিদেশি ২২৫টি প্যাভিলিয়ন ও স্টলে সেজেছে এবারের এ পণ্য সম্ভার। গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উদ্বোধনী আয়োজনে নতুন জায়গায় মেলা স্থানান্তর প্রসঙ্গে কথা বলেন সরকার প্রধান। জানান, এর ফলে ব্যয় কমবে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের।

দেশীয় পণ্যের নতুন বাজার খোঁজার পাশাপাশি উদ্যোক্তা-রপ্তানিকারকদের পণ্যের মানোন্নয়নে মনোযোগী হতে গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিতে বলেন শেখ হাসিনা। জানান, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রস্তুতি নিতে শুরু হয়েছে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার কাজ।

এছাড়া, অনুষ্ঠানে আইসিটি সেবা ও পণ্যকে ২০২২ সালের বর্ষসেরা পণ্য ঘোষণা করেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এগিয়ে যেতে হবে।

এর আগে গতকাল (শুক্রবার ৩১ ডিসেম্বর) ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে সরকারপ্রধান জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়োপযোগী এবং বিচক্ষণ উদ্যোগের ফলে বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ীদের কাছেও একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। আমরা বিনিয়োগ ও রপ্তানিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি।

তিনি বলেন, সার্বিক আর্থসামাজিক উন্নয়নের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মর্যাদাশীল ‘উন্নয়নশীল’ দেশে উন্নীত হওয়ার জাতিসংঘের চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছে। আমরা দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশে’ পরিণত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপক সম্প্রসারণ প্রয়োজন।

এ মেলা বাণিজ্য সম্প্রসারণ, পণ্য বহুমুখীকরণ, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ মেলা দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের তাদের পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধাদি এবং নতুন উদ্ভাবন সম্পর্কে ক্রেতাদের অবহিত করার সুযোগ সৃষ্টি করবে। একইসাথে ক্রেতারাও এ বৃহৎ আয়োজন থেকে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পণ্য ক্রয়ের সুবিধা পাবেন। এ মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশি উদ্যোক্তারা প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের পণ্যের মানোন্নয়নে তৎপর হবেন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্থানীয় পণ্যকে প্রতিযোগিতা সক্ষম করার প্রয়াস পাবেন।

তিনি আরও বলেন, গত দুই বছরে বিশ্ব ভয়ানক কোভিড-১৯ মহামারির সম্মুখীন হয়েছে, যা কার্যত ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তারপরও আমাদের সরকারের সময়োপযোগী ও সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে এবং প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়ে রপ্তানি বাণিজ্য কার্যক্রমের গতিশীলতা বজায় রাখা হয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, ডিআইটিএফ-২০২২ স্থানীয় ও বিদেশি উৎপাদনকারী এবং ক্রেতাদের মধ্যে গভীর আগ্রহ এবং উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে।
বাণীতে তিনি ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) ২০২২’র সার্বিক সাফল্য কামনা করেন তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন