জাতীয় ডেস্ক :
দেশের আকাশসীমা ও বিমান চলাচল আরও সুরক্ষিত ও নিরাপদ করতে চায় সরকার। বাড়াতে চায় এভিয়েশন খাত থেকে রাজস্ব আয়ও। আর তাই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রাডার ক্রয় ও আনুসঙ্গিক সেবা সহযোগিতা নিতে ফ্রান্সের সঙ্গে চুক্তি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সিএনএস-এটিএম সিস্টেমসহ অত্যাধুনিক রাডার স্থাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও ফ্রান্সের রাডার প্রস্তুতকারী কোম্পানি থ্যালাস এলএএস এর মধ্যে আনুষ্ঠানিক এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ওই চুক্তি সাক্ষরিত হয়। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী ও সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যাঁ ম্যাঁরির উপস্থিতিতে চুক্তিতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান এবং থ্যালাসের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান নিকোলাস।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, নতুন এ অত্যাধুনিক রাডার স্থাপনের ফলে দেশের সমগ্র আকাশসীমা নজরদারির আওতায় আসবে। এর ফলে বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক রুটে যাতায়াত করা সকল বিদেশি উড়োজাহাজ শনাক্ত করা সম্ভব হবে এবং এদের থেকে ফ্লাইং ওভার চার্জ আদায় করা যাবে। নতুন ও অত্যাধুনিক এই রাডার ও এটিসি টাওয়ার স্থাপনের ফলে দেশের আকাশসীমা হবে আরও সুরক্ষিত, বিমান চলাচল হবে আরও নিরাপদ এবং এভিয়েশন খাত হতে বাড়বে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ।
তিনি আরও বলেন, আজ আমরা এভিয়েশন খাতের উন্নয়নের একটি বড় পদক্ষেপের সাক্ষী হয়ে থাকছি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাডার, এটিসি টাওয়ার স্থাপন ছাড়াও কমিনিউকেশন, নেভিগেশন, সারভেইল্যান্স ও এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের সাথে সংশ্লিষ্ট আরও যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে। এর দেশে এয়ার নেভিগেশনে বর্তমানে যে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে তা দূর হবে এবং আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল সংস্থার বাধ্যবাধকতাও পূরণ করা সম্ভব হবে। দেশের এয়ার নেভিগেশন হবে সময়োপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতকে গুরুত্ব দিয়ে এর উন্নয়নে কাজ করছে বর্তমান সরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদৃঢ় নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় দেশের এভিয়েশন খাত বিকশিত হয়ে উন্নীত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানে। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির মধ্য দিয়ে বাড়ছে দেশের আকাশ পথে সংযোগের পরিধি। সারাদেশে বিমান পরিবহণ অবকাঠামোর যুগোপযোগী উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, যাত্রীসেবা বৃদ্ধি, কারিগরি ও জন দক্ষতা উন্নয়ন এবং নিরাপদ ও সুষ্ঠু বিমান চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের সকল বিমানবন্দরে উন্নয়নের নানাবিধ প্রকল্প ইতোমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে এবং হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অত্যাধুনিক থার্ড টার্মিনাল নির্মাণসহ আরও কিছু যুগান্তকারী উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কমিনিউকেশন, নেভিগেশন,সারভেইল্যান্স ও এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট আধুনিকায়নে হাতে নেওয়া এই প্রকল্পটি গত ৮ জুন সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হয়।