জাতীয় ডেস্ক:
প্রতারক ভারতে, টার্গেট বাংলাদেশে। মাধ্যম ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ। বন্ধুত্বের ফাঁদে ফেলে ধারণ করা হয় গোপন ভিডিও। সেই ভিডিও দিয়ে শুরু হয় ব্ল্যাকমেইলিং। বন্ধুত্বের এই ’হানি ট্রাপে’ পড়ে লাখ লাখ টাকা খুইয়েছেন বাংলাদেশি চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আমলাসহ ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। ভারতীয় চক্রটির চার বাংলাদেশি সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বলছে, ভুক্তভোগীরা নারী ভেবে যাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছেন তারা সবাই পুরুষ।
ভারতীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে বাংলাদেশি একে যুবকের কথোপকথনের রেকর্ডিং সময় সংবাদের হাতে এসেছে। কথাগুলো মূলত আর্থিক বিষয়ে। সবশেষ কত টাকা কীভাবে পাঠানো হয়েছে সেই তথ্য এথান থেকে দেয়া হচ্ছে ফোনে। মিলিয়ে নিচ্ছেন ওপার থেকে। তবে এই টাকার উৎস যেমন অবৈধ একইভাবে টাকা পাঠানোর চ্যানেলও বৈধ নয়।
নারীদের এমন ভুয়া ছবি ব্যবহার করে আকৃষ্ট করা হয় বাংলাদেশিদের, এরপরই গোপন ভিডিও ধারণ করে প্রতারণা করা হয়। ছবি: ভিডিও থেকে নেয়া
ফেসবুকে ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে বন্ধুত্ব। হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর আদান প্রদান। এক সময় ভিডিও কলে আহ্বান। নারী বন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভিডিও কলে আলাপচারিতা। হঠাৎ একদিন ওই বন্ধুর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে আসে গোপন ভিডিও যা ধারণ করা হয়েছিলো কখন তা জানেন না বাংলাদেশি বন্ধু। বিপত্তির শুরু এভাবেই। পরের গল্পটা পুরোটাই ব্ল্যাকমেইলিংয়ের।
গত কয়েক মাসে এ সংক্রান্ত একাধিক মামলা এবং অভিযোগ পায় পুলিশ। ভুক্তভোগীরা কেউ চিকিৎসক, কেউ প্রকৌশলী, কেউ আমলা এবং ব্যবসায়ী। তালিকায় আছেন সাংবাদিকও। তদন্ত করতে গিয়ে ভারতীয় চক্রটি শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ। বাংলাদেশে বসে যারা সহযোগিতা করে আসছিলেন তাদেরকেও করা হয় শনাক্ত। গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ কমিশনার মশিউর রহমান বলছেন, ভারতের চেন্নাই, মাদ্রাজ, রাজস্থান, দিল্লী এবং বিহারের কয়েকটি প্রতারক চক্র নারীদের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতো। নারী ভেবে বন্ধুত্বের সাড়া দিতে গিয়েই ঘটে সর্বনাশ। ইজ্জত বাঁচাতে লাখ লাখ টাকা ভুক্তভোগীরা তুলে দিয়েছেন প্রতারকদের হাতে। সেই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে চলে গেছে ভারতে।
তাই এই ধরণের বন্ধুত্বের ফাঁদ থেকে বাঁচতে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গোয়েন্দারা।