হোম ফিচার ফকিরহাটে বিভিন্ন খালে জাল-পাটা থাকায় পানি নিস্কশনে বাধা সৃষ্টি

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি :

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মাসকাটা সাবপ্রজেক্ট সরকারী খালে অবৈধ ভাবে জাল-পাটা কুমোর নাগানী ও ভেড়ীবাঁধ দিয়ে খাল ঘিরে মাছ ধরার নামে পানি নিস্কাশনে চরম বাঁধা সৃষ্টি করছে কয়েকজন স্বার্থানেশ্বী ব্যক্তি। ফলে চলতি বর্ষা মৌসুমে উপরে জমে থাকা পানি নিচে নামতে না পেরে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।

অবৈধ ভাবে জাল-পাটা কুমোর নাগানী ও ভেড়ীবাঁধ দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় অর্ধশতাধিক বিলের মৎস্য ঘের জমির ফসল ক্ষেত ও বাড়ির আঙ্গিনা পানি বন্দী অবস্থায় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব অবৈধ্যভাবে জাল-পাটা দিয়ে মৎস্য আহরন বন্দ না করলে অতি ভারী বৃষ্টিতে ব্যপক এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন সচেতন মহল।

এলাকাবাসী জানায়, ফকিরহাট উপজেলার পিলজংগ পিলজংগ, শ্যামবাগাত, টাউন-নওয়াপাড়া, বেতাগা ইউনিয়নের মাসকাটা, ধনপোতা, চাকুলী, লখপুর, ভট্টেখামার জাড়িয়া জাড়িয়া মাইটকুড়া ও ভবনা এলাকার উপরে জমে থাকা বৃষ্টির পানি এই মাসকাটা-ধনপোতা সাবপ্রজেক্ট সরকারী খাল হয়ে যুগীখালী নদীর উপর দিয়ে ৬ গেট অতিক্রম করে পানি রুপসার ভৈরব নদীতে গিয়ে পড়ে। সেই হিসাবে মাসকাটা-ধনপোতা সাবপ্রজেক্ট সরকারী খালটি সকল মানুষের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

এই অঞ্চলের প্রায় অধিকাংশ ধান ও মৎস্য চাষিরা এই খালের উপর নির্ভরশীল হয়ে তাদের জমিতে চাষাবাদ করে থাকেন। কিন্তু বছরের পর বছর সেই খালে অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি অবৈধ ভাবে জাল-পাটা কুমোর নাগানী ও ভেড়ীবাধ দিয়ে ঘিরে মাছ ধরার কাজ করে আসছে। যে কারনে প্রবল বর্ষনে উপরে জমে থাকা বিপুল পরিমানে পানি নিচেই নামতে না পারায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

লখপুরের ভবনা গ্রামের ইউসুপ আলী, নজরুল ইসলাম. দাউদ গাজী, মিরাজুল ইসলাম, এলাহী শেখ, হিরন আলী ও জালাল শেখ সহ একাধিক ব্যক্তিরা অভিযোগ করে বলেন মাসকাটা সরকারী খাল সহ তার ছোট ছোট জোলা খালে ২০হাত অন্তর অন্তর ভেশাল নাগানী কুমোর ও জাল-পাটা দেওয়া হয়েছে। দখলকারিরা পানি নিচেই বড় বড় কুমোর জাল-পাটা ও নেট দিয়ে ঘিরে চারো বচনো দোয়োড় পেতে রেখেছে। যে কারনে খালে স্রোত থাকলেও তা সহজে নিচেই সরবরাহ হতে না পেরে খাল বিল ও ঘেরে পানি জমে থাকছে।

তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, বেতাগা ইউনিয়নের মাসকাটা গ্রামের আলোমগীর মোড়ল, হুমায়ুন মোড়ল, আরিফ হোসেন, আলামিন শেখ, মনিরুজ্জামান মনি, বিল্লাল হোসেন, লুৎফার রহমান ও মুজাহিদ সহ শতাধিক ব্যক্তিরা মাসকাটা খালে জাল-পাটা নেট ও কুমোর দিয়ে খালটি ঘিরে সেখানে মাছ ধরার নামে পানি নিস্কাশনে চরম বাঁধা সৃষ্টি করছে। বছরের পর বছর ধরে একই ব্যক্তিরা একই স্থানে অবৈধ ভাবে সরকারী খাল দখল করে নেট জাল পাটা দিলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন না করায় খাল-বিল গুলোতে স্থায়ী জলাবদ্ধতা এখন চরম আকার ধারন করেছে।

স্থানীয়রা জানান, লখপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য শেখ আরিদ হোসেন, ৬নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ বজলুর রহমান মোড়ল ও ৭নং ওয়ার্ড সদস্য হারুনার রশিদ বলেন বছরের পর বছর ঐ সরকারী খালে একই ব্যক্তিরা খাল ঘিরে মাছ ধরার কাজ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়না।

এছাড়াও যুগীখালী নদীর উপরী অংশ হতেও সকল অবৈধ জাল পাটা নেট কুমোর উচ্ছেদ করার দাবী তুলেছেন স্থানীয়রা।

এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা বেগম বলেন, আমি স্ব স্ব ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি অবগত করেছি। দ্রুত খাল গুলো হতে জাল-পাটা নেট ভেশাল ও কুমোর উচ্ছেদের ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে তিনি জানান।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন