হোম অর্থ ও বাণিজ্য প্যাকেটজাত মসলার ভিড়ে চাহিদা হারাচ্ছে হলুদ-মরিচ ভাঙানোর কারখানা!

বাণিজ্য ডেস্ক:

কোরবানির ঈদ এলেই একসময় জমজমাট হয়ে উঠত মসলা ভাঙানোর দোকানগুলো। তবে এখন যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে হারিয়ে যেতে বসেছে হলুদ-মরিচ ভাঙানোর মিলগুলো। নেই চিরচেনা সেই ভিড়। মিল মালিকদের দাবি, ভোক্তারা এখন মসলা ভাঙানোর চেয়ে প্যাকেটজাত মসলার দিকেই বেশি ঝুঁকছেন।

শুক্রবার (১৪ জুন) সরেজমিন কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বাজার ও রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

কোরবানি ঈদের বাকি হাতে গোনা কয়েক দিন। প্রতিবছর এ সময়ে মসলা ভাঙানোর মিলগুলোতে ব্যস্ততা থাকলেও এবার এখনও বাড়েনি তেমন চাপ। অলস সময় পার করছেন মিল মালিকরা।

তারা বলেন, বাজারে সব ধরনের মসলার দাম বাড়তি। এ ছাড়া মসলা ভাঙাতে আলাদা খরচ রয়েছে। এসব বিবেচনায় এখন মানুষ মসলা কিনে ভাঙানোর চেয়ে রেডিমেড প্যাকেটজাত মসলা ব্যবহারকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।

কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বাজারের মিল মালিক মো. স্বপন বলেন, গত বছর কিছুটা চাপ থাকলেও এবার একেবারেই নেই। প্রতিনিয়ত কমছে চাহিদা। বাজারে কাঁচা মসলার দাম হুহু করে বাড়ছে। তাই মানুষ মসলা কিনে ভাঙানো কমিয়ে দিয়েছে। তার বেশি কিনছে প্যাকেটজাত মসলা।

তবে ‘চাঁদরাতের’ আগে মসলা ভাঙানোর চাপ কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন স্বপন। তিনি বলেন, এখনও হাতে তিন দিন আছে। চাঁদরাতে চাপ কিছুটা বাড়তে পারে।

মসলা ভাঙানোর খরচ সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বপন জানান, প্রতিকেজি মসলা ভাঙাতে ৫০-৬০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।

এদিকে এসব দোকানের কাস্টমার কম হলেও বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষে অনেকেই এসেছেন মসলা ভাঙাতে। কথা হয় তাদেরই একজন মোশারফ হোসেনের সঙ্গে। তিনি সময় সংবাদকে বলেন, ভাঙানো মসলার স্বাদ অন্যরকম। যেটা প্যাকেটজাত মসলায় পাওয়া যায় না। তবে এতে খরচ পড়ে বেশি। তা-ও ঈদ উপলক্ষে মসলা ভাঙাতে এসেছি।

এ তো গেল মসলা ভাঙানোর খবর। এবার খোঁজ নেয়া যাক প্যাকেটজাত মসলার। বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৩০ থেকে ৫০ টাকায় মিলছে ৫০ গ্রামের প্যাকেটজাত বিভিন্ন মসলা।

মুক্তার আলী নামে এক ক্রেতা জানান, প্যাকেটজাত মসলায় ভাঙানোর খরচ নেই, ঝামেলা নেই। যখন খুশি তখন দোকান থেকে কিনে নিয়ে রান্না করা যায়। তবে ভাঙানো মসলার স্বাদই অন্যরকম। সময়ের অভাবে প্যাকেটজাত মসলাই এখন ভরসা।

আর দোকানিরা জানান, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে প্যাকেটজাত মসলার চাহিদা। তুলনামূলক দাম কম ও পরিমাণে চাহিদামতো পাওয়ায় মানুষ এদিকেই ঝুঁকছে।

কাঁচা মসলার বাজারদর জানতে রাজধানীর শ্যামবাজারের আড়তগুলো ঘুরে দেখা যায়, জিরা, হলুদ, শুকনা মরিচ ও ধনিয়ার দাম কিছুটা বাড়তি।

বিক্রেতারা জানান, প্রত্যেক কোরবানির ঈদের আগেই মসলার দাম কিছুটা বাড়ে। এবারও তাই হয়েছে। মূলত ডলারের সংকট ও দাম বাড়ায় এবার মসলার দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি বেড়েছে।

রাজধানীর শ্যামবাজারের মসলা ব্যবসায়ী রাশেদ জানান, দেশি শুকনো মরিচ মানভেদে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, ইন্ডিয়ান শুকনা মরিচ ৩৮০ থেকে ৪২০ টাকা, ধনিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, হলুদ মানভেদে ২৮০-৩৫০ টাকা ও জিরা ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন