হোম সিলেটমৌলভীবাজার পানিতে তলিয়ে রয়েছে কৃষি জমি: কৃষকদের বিনামুল্যে চারা দিতে স্কুল মাঠে বীজ তলা করেছেন প্রধান শিক্ষক, উৎপাদিত করা যাবে ৩৪ মেট্রিকটন ধান

পানিতে তলিয়ে রয়েছে কৃষি জমি: কৃষকদের বিনামুল্যে চারা দিতে স্কুল মাঠে বীজ তলা করেছেন প্রধান শিক্ষক, উৎপাদিত করা যাবে ৩৪ মেট্রিকটন ধান

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 34 ভিউজ

চৌধুরী ভাস্কর হোম, মৌলভীবাজার:

চলমান বন্যার পানিতে এখনও ডুবে আছে মৌলভীবাজার বড়লেখার ফসলী জমি। হাকালুকি হাওর এলাকার অনেক চাষের জমি থেকে এখনও নামেনি পানি। এই সকল জমি ভেসে উঠার পর এখানে চাষ করা হয় আমন ধান। ধীরগতিতে পানি কমায় আমন ধানের চারা রোপণ তো দূরের কথা, বীজতলা তৈরিতেই ব্যর্থ কৃষকেরা। যার ফলে কোন জমি ভাসান না থাকায় বীজতলা নিয়ে কৃষকরা হয়ে পরেছেন দুশ্চিন্তাগস্থ। মৌসুমের শুরুতেই আবাদ হুমকির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় বর্গাচাষিদের কষ্টের কথা চিন্তা করে নিজ উদ্যোগে বড়লেখা দাশের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক রঞ্জন দাশ তার স্কুল মাঠে বপন করেছেন আমন ধানের হালিচারা। পানি কমার পর পরই যা বিতরণ করবেন কৃষকদের মধ্যে। যা থেকে কৃষকরা উৎপাদন করতে পারবেন ৩৪ মেট্রিকটন ধান।

এখন প্রায় বছরই বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর পাড়ে দেখাদেয় দীর্ঘ মেয়াদী বন্যা। এর ফলে বিপাকে পড়েন হাওর কেন্দ্রীক কৃষকরা। চলমান মৌসুমেও পানিতে তলিয়ে আছে বড়লেখার আমন ধানের বীজতলাসহ ফসলী মাঠ। এতে বুরো ফসল উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা। এ অব্সথায় বড়লেখা উপজেলার দাশের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার বিদ্যালয় মাঠে তিনি তৈরী করেছেন ধানের বীজতলা। ইতিমধ্যেই চারা বড় হয়েছে। পানি কমলেই বীনা মুল্যে এ চারা কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করবেন যেন সাথে সাথে হালিচারা রোপন করা যায়।

উপজেলা কৃষি বিভাগের সার-বীজ ও কারিগরি সহযোগিতায় স্কুলের খেলার মাঠে ব্যক্তিগত অর্থায়নে ৮০ শতাংশ ভূমি চাষ দিয়ে বীজতলা তৈরি করেছেন। প্রায় ৩ বিঘা জমিতে তিনি অনান্য শিক্ষক ও কৃষি বিভাগের সহায়তা নিয়ে আমনের বীজতলা করেছেন। যেখান থেকে ৫৭ বিঘা জমি চাষ করা যাবে। যা থেকে কৃষকরা উৎপাদন করতে পারবেন ৩৪ মেট্রিকটন ধান।

দাশের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক রঞ্জন দাস জানান, তার এলাকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রান্তিক বর্গাচাষিদের কথা চিন্তা করে স্কুলের খেলার মাঠে আমন ধানের বীজ বপনের উদ্যোগ নেন। কৃষি বিভাগের বীজ, সার ও কারিগরি সহায়তায় নিজের অর্থে বীজতলা তৈরী করেন। তিনি খোঁজে খোঁজে ক্ষতিগ্রস্থ ৫৩ জন বর্গাচাষি কৃষকের তালিকা তৈরী করেছেন। প্রত্যেককে একবিঘা জমিতে আমন লাগানোর চারা প্রদান করবেন। চলতি মাসেই কৃষকদের হাতে চারা তোলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কৃষকের মূখে হাসি ফোটাতেই তার এই প্রচেষ্টা।

বড়লেখা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এসএম রাশেদুজ্জামান বিন হাফেজ জানান, বড়লেখায় আমন চাষীদের অনেকের বীজতলা এখনও বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। এ অবস্থায় উপজেলা কৃষিবিভাগ উঁচু এলাকার বিভিন্ন স্থানে বীজ বপনের পরামর্শ ও সাপোর্ট দিচ্ছে। দাসেরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক রঞ্জন দাস আগ্রহী হওয়ায় আমরা তাকে আমন বীজ (বি.আর-২২), রাসায়নিক সার ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছি। তার (প্রধান শিক্ষক) অর্থায়নে ৮০ শতাংশ ভূমিতে বপন করা ২৭০ কেজি বীজে ৫৩ বিঘা জমিতে ধান আমন ধান রোপন করা যাবে। এখান থেকে অন্তত ৩৪ মেট্টিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজরাতুন নাঈম জানান, প্রধান শিক্ষক দীপক রঞ্জন দাসের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। যে কোনো দুর্যোগ কালিন মুহুর্তে আমাদের হতদরিদ্র কৃষক ভাইদের সহায়তায় এভাবে এগিয়ে আসলে তারা কৃষি পণ্য উৎপাদনে আরো বেশি উৎসাহী হবেন।

প্রধান শিক্ষক দীপক রঞ্জন দাশের ব্যতিক্রমী এ কর্মকান্ডে খুশি কৃষক ও এলাকাবাসী।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন