নিজস্ব প্রতিনিধি :
ভয়াবহ করোনার বিস্তারে জনজীবন যখন বিপর্যস্ত তখন উন্নত বিশ্ব সহ দেশে মৃত্যু ও আক্রান্তের হার জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারী বে-সরকারীভাবে জনসচেতনতায় ব্যাপক প্রচার প্রসার সহ আইন প্রয়োগ করা হলেও কোনভাবেই সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা যাচ্ছে না তালা উপজেলার তৈলকূপী গ্রামে। গতকাল বিকালে পাটকেলঘাটা থানা সদর হতে মাত্র ১ কিলোমিটার ভিতরে চরাটমোড় নামক স্থানে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ তো দূরের কথা যেন সংক্রমণের হাট বসিয়েছে।
স্থানীয় সচেতন এলাকাবাসী তাদেরকে সচেতন করলেও উল্টো শাসিয়ে এ করোনার হার বিস্তার করছে। বিশেষ করে আব্দুল আহাদ সহ ৪/৫ জনের একটি মৎস্য ব্যবসায়ী দল এখানে বেলা ৩ টার পর হতে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত জমজমাট হাট বসিয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশ রয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী শুধুমাত্র সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে বিক্রি করতে হবে। কিন্তু এখানে তা মানা হচ্ছে না। স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সহ অন্যান্য দ্রব্যের জমজমাট হাট বসিয়ে চলেছে। এদিকে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, পাটকেলঘাটার ৫টি ইউনিয়নের উল্লেখযোগ্য বাজারগুলি সচেতনতায় দৃষ্টান্ত রাখছে।
কিন্তু এখানে তা না মানায় দূর দুরন্ত সহ আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামের লোকজন এ বাজারে প্রতিদিনই ভিড় করছে। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুস সাত্তার, কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির নেতা আশরাফ উদ্দীনসহ স্থানীয় অনেক সচেতন মানুষ সচেতনতার জন্য বারবার সকলকে অনুরোধ করছে এভাবে হাট না বসানোর জন্য। তবুও তারা মানছে না। নেই সামাজিক নিরাপত্তা, হ্যান্ড গ্লোবস, মাস্ক এমনকি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। পাশের আরো একটি বাজার তৈলকূপী বাজারখোলা নামের বাজারে রমরমা চায়ের আসর চলছে। তবে একটু ব্যতিক্রম। সকাল, সন্ধ্যা, রাত কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছে না।
কয়েকজন দোকানদার কাস্টমারকে চা দিয়ে অন্যত্রে আড্ডা দিতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এ বিষয়ে গ্রামবাসী উদ্বিঘœ হয়ে পড়েছে। এদিকে গত ২/৩ দিনে গ্রামটিতে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, মাদারিপুর, মানিকগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকার কলেজপড়–য়া ছাত্র, গার্মেন্টস কর্মী, ইটভাটার শ্রমিক কৌশলে এলাকায় ফিরেছে। তারা গা ঢাকা দিলেও হোম কোয়ারেন্টাইন কিভাবে করতে হয় তা তাদের জানা তো দূরের কথা সক্ষমতাও নেই।
তারা বাড়ির মধ্যে বদ্ধ থাকলেও তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা স্বাভাবিকভাবে প্রতিবেশীর বাড়িতে আসা যাওয়া করছে। এতে দারুণভাবে চিন্তিত হয়ে পড়েছে সচেতন জনসাধারণ। বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবৎ তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হলেও তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নি। বর্তমান আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য থানায় এলাকাভিত্তিক অফিসার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি অফিসারকে জানানো হলে তিনি জানান আমারও পরিবার আছে। আমার নিরাপত্তা আছে। আপনারা ইউএনও ও দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটকে বলুন। এবিষয়ে তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খন্দকার রবিউল ইসলাম ১০ এপ্রিল সন্ধ্যার সময় পাটকেলঘাটার শ্মশানঘাট এলাকায় আবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিয়ম না মেনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু রাখায় ১ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এসময় ম্যাজিস্ট্রেটকে তৈলকূপী গ্রামের ভিডিও ফুটেজ দেখানো হলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বস্থ করেছেন।